প্রতীকী ছবি।
গত বুধবার ছিল বোনের বিয়ে। সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য বিভাগীয় প্রধানের কাছে ছুটি চেয়েছিলেন ডাক্তারির পড়ুয়া ওঙ্কার। কিন্তু ছুটি পাননি। বৃহস্পতিবার রাতে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। অভিযোগ, শুধু এক দিনের ঘটনা নয়, বিভাগীয় প্রধানের কাছে দিনের পর দিন, নানা ভাবে হেনস্থার শিকার হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ওঙ্কার।
হরিয়ানার রোহতকে, পণ্ডিত ভগবৎ দয়াল শর্মা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (পিজিআইএমএস)-এ পেডিয়াট্রিকস নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন ওঙ্কার। বছর তিরিশের ওঙ্কারের বাড়ি কর্নাটকের ধারবাড় জেলায়। সহপাঠীদের অভিযোগ, বছর দুয়েক ধরেই বিভাগীয় প্রধানের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। মৃতের বাবা জানিয়েছেন, ছেলে প্রায়শই ফোনে বলত, কী ভাবে সকলের সামনেই তাঁকে হেয় করতেন বিভাগীয় প্রধান। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ওঙ্কার।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় পুলিশে এফআইআর করেছেন ওই ইনস্টিটিউটের ৩২ জন পড়ুয়াও। তাঁদের সমবেত দাবি, বিভাগীয় প্রধান গীতা গাঠওয়ালার হাতে হেনস্থা সহ্য না করেই আত্মহত্যা করেছেন ওঙ্কার। ঘটনার তদন্তে নেমেছে রোহতক থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: পাড়ার ‘বখাটে’দের নিয়ে ভবিষ্যতের লড়াইয়ে নামতে চান মমতা
রোহতক থানার ওসি জানিয়েছেন, গীতা গাঠওয়ালার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও এখনও তাঁকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ঘটনার পরের দিন তাঁকে সাসপেন্ড করেছেন পিজিআইএমএস কর্তৃপক্ষ। এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত করানো হবে বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের ভাইস চ্যান্সেলর ও পি কালরা।
আরও পড়ুন: নবান্নে যেতে নারাজ জুনিয়র ডাক্তাররা, জট কাটাতে এনআরএসে পৌঁছলেন আইএমএ-র কর্তারা
আর্থিক দিক থেকে খুব একটা সচ্ছল নয় ওঙ্কারের পরিবার। বাবা রেলের ওর্য়াকশপে কাজ করেন। ডাক্তারি পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খেতেন ওঙ্কার। এমনকি, ডাক্তারি পড়ার জন্য সে ঋণ নিয়েছিলেন, তা কী ভাবে মেটাবেন, তা নিয়েও চিন্তায় ছিলেন। এসবের মধ্যেই বিভাগীয় প্রধানের হাতে ক্রমাগত হেনস্থা তাঁর উপর বাড়তি চাপ হয়ে গিয়েছিল। ওঙ্কারের বাবার কথায়, ‘‘ছেলে প্রায়ই ফোন করে বলত, কী ভাবে এইচওডি (বিভাগীয় প্রধান) ওকে কোনও কারণ ছাড়াই হেনস্থা করতেন। তাঁর ব্যবহারে ও খুব মনমরা হয়ে থাকত।’’ তাঁর দাবি, বোনের বিয়েতে তাঁকে নিজে হাতে উপহার দিতে চেয়েছিলেন ওঙ্কার। তবে ছুটি না মেলায় বিয়েতেই আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন: অভিমুখ বদলে ফের গুজরাতের দিকে বায়ু? কেন্দ্র সতর্ক করলেও মানতে নারাজ রাজ্য
গীতা গাঠওয়ালার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ওঙ্কারের সহপাঠীরাও। তাঁদের দাবি, সকলের সামনে অপমান করা ছাড়াও, ওঙ্কারকে ভুয়ো মামলাতেও ফাঁসিয়েছেন গীতা। তাঁর কড়া শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন ওঙ্কারের সহপাঠীরা। এ ছাড়া, মৃতের পরিবারের জন্য এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণও চেয়েছেন তাঁরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদেরYouTube Channel - এ।