রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র
লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ‘হিন্দু’ মন্তব্যের জেরে উত্তাল হল লোকসভা। সোমবার রাষ্ট্রপতির প্রারম্ভিক ভাষণ নিয়ে আলোচনায় বক্তব্য রাখতে ওঠেন রাহুল। শাসক জোটের সাংসদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যাঁরা নিজেদের হিন্দু বলেন, তাঁরা কেবল হিংসার কথা বলেন, ঘৃণার কথা এবং অসত্য কথা বলেন।” তার পরই ট্রেজ়ারি বেঞ্চ থেকে হইচই শুরু হয়ে যায়। বিজেপি সাংসদেরা রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন। এমনকি রাহুলের বক্তব্যের মাঝেই নিজের আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।”
সোমবার রাহুল শিব, হজরত মহম্মদ, গুরু নানক এবং জিশুখ্রিষ্টের ছবি দেখিয়ে ভারত এবং অহিংসার ধারণা ব্যাখ্যা করেন। শিবের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যদি প্রভু শিবের ছবি দেখেন, তবে বুঝবেন হিন্দুরা কখনও ভয়, হিংসা ছড়াতে পারে না। কিন্তু বিজেপি সর্ব ক্ষণ ভয়, ঘৃণা ছড়িয়ে বেড়ায়।” শিবের অভয়মুদ্রার সঙ্গে কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক হাতেরও যোগসূত্র টানেন রাহুল। একই সঙ্গে রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “মোদী, বিজেপি, আরএসএস-ই কেবল হিন্দু নয়।” তার পরই লোকসভায় হইচই শুরু হয়ে যায়।
রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “উনি (রাহুল) জানেন না কোটি কোটি মানুষ নিজেকে গর্বভরে হিন্দু বলে থাকেন। কোনও ধর্মের সঙ্গে হিংসাকে জড়িয়ে দেওয়া ভুল। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।” রাহুলকে আক্রমণ করতে গিয়ে কংগ্রেস আমলের জরুরি অবস্থা এবং শিখ-বিরোধী হিংসার প্রসঙ্গ তোলেন শাহ।
সোমবার বক্তব্যের শুরুতেই রাহুল দাবি করেন, ভারত নামক ধারণার উপরে আঘাত নেমে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই ইডি তাঁকে হেনস্থা করেছে বলে দাবি করেন রাহুল। তাঁর কথায়, “আমি ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আক্রমণের শিকার হয়েছি। আমার সবচেয়ে উপভোগযোগ্য মুহূর্ত হল ৫৫ ঘণ্টা ধরে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হওয়া।” প্রধানমন্ত্রীর ‘পরমাত্মা’ মন্তব্য নিয়েও মোদীকে কটাক্ষ করেন রাহুল।