ছবি: পিটিআই।
রাহুল গাঁধীকে ফের দলের সভাপতি করতে চাইছেন সনিয়া গাঁধী। কিন্তু রাহুলের ঘনিষ্ঠ নেতারাই প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘আমরা তো চাইছি। রাহুল এখনও হ্যাঁ বলেননি।’’ আজ সকাল থেকেই লোকসভা উত্তপ্ত রাহুলের ‘মোদীকে লাঠিপেটা’ মন্তব্য নিয়ে। তার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর ‘টিউবলাইট’ খোঁচার জবাব দেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর পদের একটি মর্যাদা আছে, আচরণেরও ধরন আছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সে সব বালাই নেই। প্রধানমন্ত্রীর মতোও আচরণ করেন না।’’ কিন্তু এই বিতর্কের মধ্যেই আজ দুপুরে রটে যায়, সংসদের সেন্ট্রাল হলে রাহুল বলেছেন, তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হচ্ছেন না।
লোকসভায় আজকাল দলের রাহুল-ঘনিষ্ঠ সাংসদরাই আক্রমণাত্মক থাকেন। রাহুল সক্রিয় হওয়ায় তাঁরাও এখন চাঙ্গা। এমন এক পরিস্থিতিতে রাহুলের সভাপতি না-হওয়ার খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সংসদ চত্বরে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘শুনেছি, তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কবে হবেন সভাপতি? রাহুল নাকি এক বার নয়, তিন বার বলেছেন, সভাপতি হচ্ছেন না।’’ সোশ্যাল মিডিয়াতেও আলোচনা শুরু হয়, রাহুল কি সত্যিই এমন কথা বলেছেন? নাকি গোটাটাই রসিকতা? আর যদি বলেই থাকেন, তাতে কি প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সভাপতি হওয়ার পথ প্রশস্ত হল? মা সনিয়াও কি মেনে নেবেন সে প্রস্তাব? কারণ, আগেই দলের অনেক নেতা সনিয়াকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কাকে সভানেত্রী করার। সনিয়া তা খারিজ করে দেন।
আলোচনা জোরালো হতেই সক্রিয় হয় রাহুল-শিবির। জানানো হয়, ‘‘রাহুল আদৌ সেন্ট্রাল হলে এমন কিছু বলেননি। সভাপতি পদের বিষয়ে তো বলেনইনি। বরং বলেছেন, এখন তিনি সভাপতি নেই। অথচ দল যেখানেই প্রচার বা পদযাত্রা করতে বলবে, সেটি তিনি করবেন।’’ এই শিবিরের নেতাদের দাবি, রাহুল সভাপতি ছিলেন, ভবিষ্যতে তিনিই সভাপতি হবেন। কবে হবেন, সেটি তাঁর সিদ্ধান্ত। যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী নিরন্তর রাহুলকে আক্রমণ করছেন, এর থেকেও কি স্পষ্ট নয় বিরোধী দলের একমাত্র মুখ রাহুলই?
আরও পড়ুন: মোদীর কথা বাদ পড়ল রেকর্ড থেকে
বিজেপি অবশ্য প্রায়ই বলে, রাহুল তাঁদেরই ‘তারকা প্রচারক’। বিজেপির এক নেতা আজ বলেন, ‘‘গত কাল দেখেছেন তো, লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী যখন রাহুলকে টিউবলাইট বললেন, কংগ্রেসের এক জন নেতাও প্রতিবাদ করেননি। পুত্রমোহে সনিয়া যদিও সব সময়ই চাইবেন, রাহুল দলের দায়িত্ব নিন। কিন্তু কংগ্রেসের যে প্রবীণদের বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাহুল ইস্তফা দিয়েছিলেন, তাঁদের এখনও পদ থেকে সরাতে পারেননি সনিয়া। হতে পারে, রাহুল দায়িত্ব নিচ্ছেন না সে কারণেই।’’ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা অবশ্য বললেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে রাহুলের ক্ষোভ ছিল, তাঁরা এখন সনিয়ার পাশাপাশি রাহুলের কথাও শুনছেন। আসলে এখনই দায়িত্ব নেওয়ার কোনও তাড়া নেই রাহুলের। উপযুক্ত সময়ে এই সিদ্ধান্ত হবে।’’