ভেঙে পড়া সেই শিবাজীর মূর্তি। — ফাইল চিত্র।
মাত্র আট মাস আগেই ধুমধাম করে উদ্বোধন করা হয়েছিল ৩৫ ফুটের শিবাজীর মূর্তি। নিজের হাতে মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ছত্রপতির সেই মূর্তিই ভেঙে পড়েছে হুড়মুড়িয়ে আর এর পরেই নানা মহলে শুরু হয়েছে সমালোচনা। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। এরই মাঝে ফের অভিযোগ উঠল, উচ্চতার বৈধ সীমার চেয়েও না কি ছ’গুণ উঁচু ছিল সেই মূর্তি! অবৈধ নির্মাণের জেরেই কি দুর্ঘটনা?
ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদনের দাবি, বৈধ সীমার চেয়েও অন্তত ছ’গুণ উঁচু রাখা হয়েছিল মূর্তির উচ্চতা। সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে ছ’ফুট মাটির মূর্তি তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষমেষ স্টিলের মূর্তি বানানো হয়। মূর্তির উচ্চতা রাখা হয় ৩৫ ফুট! যা বৈধ সীমার প্রায় ছ’গুণ!
সূত্র জানাচ্ছে, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণের ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া যায় রাজীব মিশ্রের নেতৃত্বূাধীন মহারাষ্ট্র অধিদফতর থেকে। আর কোনও ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের মূর্তি নির্মাণের ক্ষেত্রে মূর্তির মুখের আদল থেকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অনুপাত— সব কিছু নজরে রাখার দায়িত্ব দফতরেরই। এ সব কিছু খতিয়ে দেখার পরেই অনুমোদন মেলে। তা হলে এ ক্ষেত্রে কেন ভুলত্রুটি সরকারি দফতরের চোখ এড়িয়ে গেল, উঠছে প্রশ্ন।
এ ছাড়াও, প্রকল্পের সার্বিক নির্মাণ এবং পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী। মূর্তি নির্মাণের উপাদানগুলি এসেছিল পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) থেকে। তবে এখন তদন্তের স্বার্থে মুখে কুলুপ এঁটেছে তারাও।
সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গ জেলার রাজকোট দূর্গে শিবাজীর ওই মূর্তিটি ভেঙে পড়ে। মূর্তি কেন ভাঙল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চাপানউতর। পূর্ত দফতরের তরফে ঠিকাদার জয়দীপ আপ্তে এবং চেতন পাটিলের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআরও। অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, নিম্নমানের দ্রব্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল মূর্তিটি। পাশাপাশি ওই মূর্তিতে যে নাট বল্টু ব্যবহার করা হয়েছিল, তাতেও মরচে ধরেছিল। যার ফলেই না কি ঘটেছে দুর্ঘটনা।
অবশ্য মূর্তি ভেঙে পড়ার জন্য প্রবল হাওয়াকে দায়ী করছেন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে! তাঁর দাবি, দুর্ঘটনার সময় প্রতি ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছিল। তবু থামছেন না বিরোধীরা। রবিবার প্রতিবাদে পথে নেমেছে মহারাষ্ট্রের বিরোধী শিবির। মুম্বইয়ের পথে ‘জুতো মারো’ কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরেরাও।