প্রচারের ফাঁকে: কর্নাটকের হুবলীতে কংগ্রেসের জনসভায় সনিয়া ও রাহুল গান্ধী। রয়েছেন দলীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও। শনিবার। পিটিআই
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘুরে দাঁড়াতে কংগ্রেস কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে জিততে মরিয়া। সেই কর্নাটকে কংগ্রেসকে জেতাতে আজ সনিয়া গান্ধী নিজেই শারীরিক অসুস্থতা অগ্রাহ্য করে ভোটের প্রচারে নামলেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পরে এই প্রথম ভোটের প্রচার করলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী।
সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেসের হয়ে সনিয়া গান্ধী একটি মাত্র জনসংযোগ কর্মসূচিতেই অংশ নিয়েছিলেন। গত বছর অক্টোবরে এক দিন রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় পা মিলিয়েছিলেন। সেটিও ছিল কর্নাটকের মাণ্ড্যতে। সেটি ছিল কর্নাটকের প্রভাবশালী সম্প্রদায় ভোক্কালিগা অধ্যুষিত এলাকা। আজ সনিয়া প্রচার করেছেন কর্নাটকের হুবলীতে। লিঙ্গায়ত অধ্যুষিত অঞ্চলে। কংগ্রেস এ বার বিজেপির লিঙ্গায়ত ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে মরিয়া। বিজেপির দুই লিঙ্গায়ত নেতা জগদীশ শেট্টার ও লক্ষ্মণ সভাডি বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসেযোগ দিয়েছেন।
সনিয়ার প্রচারের আগেই শনিবার সকালে কংগ্রেস একটি অডিয়ো-ক্লিপ প্রকাশ করে দাবি করেছিল, বিজেপির নেতা মণিকান্ত রাঠোড় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও তাঁর পরিবারকে খুনের পরিকল্পনা করছেন। সনিয়া হুবলীর জনসভা থেকে প্রথমেই মনে করিয়েছেন, কংগ্রেসের ইতিহাসে কর্নাটকের গুরুত্ব ও গান্ধী পরিবারের সঙ্গে কর্নাটকের সম্পর্ক। সনিয়া বলেছেন, ১৯৭৮-এ ইন্দিরা গান্ধী কেন্দ্রে তাঁর বিরোধী সরকারের দমননীতির মুখে চিকমাগালুর থেকে লোকসভা ভোটে জিতেছিলেন। তিনি নিজে ২৪ বছর আগেবল্লারি থেকে প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়েছিলেন।
কর্নাটকে বিজেপি ‘৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সনিয়া বলেছেন, ‘‘এখন বিজেপি প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। বলছে, বিজেপি না জিতলে কর্নাটক মোদীর আশীর্বাদ পাবে না। কর্নাটকের মানুষ কারও আশীর্বাদের ভরসায় থাকেন না। নিজের পরিশ্রম, সঙ্কল্পের ভরসায় চলেন।’’
আজ রাহুল গান্ধীও কর্নাটকের প্রচারে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘৪০ শতাংশ ঘুষের সরকার’ চালানোর অভিযোগ তুলেছেন। রাহুলের যুক্তি, কর্নাটকে পাঁচ বছর আগে বিজেপি হেরে গেলেও চুরি করে সরকার তৈরি করেছিল। টাকা দিয়ে, বিধায়কদের কিনে সরকার গঠন করেছিল। চুরি করে সরকার তৈরি হলে সেই সরকার চুরি করবেই। কর্নাটকের ঠিকাদারেরা বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ৪০ শতাংশ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেও তিনি তার জবাব দেননি। বিজেপি নেতারাই বলছেন, আড়াই হাজার কোটি টাকায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি কেনা যায়।
১০ মে কর্নাটকের ভোটগ্রহণ। ৮ মে প্রচার শেষ হচ্ছে। নরেন্দ্র মোদী শনি ও রবিবার, দু’দিনই কর্নাটকে প্রচার করছেন। রাহুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আসেন। দুর্নীতি নিয়ে একটি শব্দও বলেন না।” মোদীকে প্রশ্ন ছুড়ে রাহুল বলেছেন, গত তিন বছরে কর্নাটকে দুর্নীতি রুখতে কী ব্যবস্থা হয়েছে? কত জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? কত জনকে জেলে ভরা হয়েছে?