দিল্লির রামলীলা ময়দানে কৃষকদের মহাপঞ্চায়েত। ছবি: রয়টার্স।
নিজেদের দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার সংযুক্ত কিসান মোর্চার দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘মহাপঞ্চায়েতের’ ডাক দিয়েছিল। সেই মহাপঞ্চায়েত থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন কৃষকনেতারা। প্রতিবাদী কৃষকদের সামনে বক্তৃতা করেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত। তিনি বলেন, “ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্যের দাবি থেকে আমরা নড়ছি না। আজকের মহাপঞ্চায়েত থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা গ্রামে-শহরে ছড়িয়ে দেবেন কৃষকেরা।”
আর এক কৃষকনেতা গুরনাম সিংহ চাদুনি বলেন, “কৃষকদের-মজুরদের দাবিপূরণ করেনি কেন্দ্র। তাই আন্দোলনের পথে যেতে হয়েছে আমাদের।” প্রতিবাদী কৃষকদের দাবি, ফসলের ন্যায্য সহায়ক মূল্যের আইনি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কৃষিঋণ মকুব করতে হবে এবং স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাব মেনে কৃষকদের ন্যায্য সহায়ক মূল্য, পেনশন দিতে হবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হলুদ পতাকায় ছেয়ে যায় রামলীলা ময়দান চত্বর। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ঘন ঘন স্লোগান ওঠে।
কৃষক মহাপঞ্চায়েতের কারণে যানজট হবে, এমন আশঙ্কা করে বুধবার বিকেলের পরেই যান নিয়ন্ত্রণ শুরু করে দিল্লি পুলিশ। তার পরেও অবশ্য বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নয়ডা-দিল্লি সড়কে যানজট দেখা যায়। সড়ক এবং রেলপথে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে ঢোকেন কৃষকেরা। আগেই দিল্লি পুলিশের তরফে বলা হয়েছিল, সর্বোচ্চ ৫০০০ জনকে নিয়ে জমায়েত করা যাবে। ট্র্যাক্টর নিয়ে জমায়েত করা যাবে না। তবে ৫০০০-এর অনেক বেশি সংখ্যক কৃষক বৃহস্পতিবার দিল্লির মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেন।
নিজেদের দাবিদাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পঞ্জাব থেকে কয়েক হাজার কৃষক দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয়। আন্দোলনকারী সেই কৃষকদের পঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমান্তেই আটকে দেয় হরিয়ানা পুলিশ। দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরেই দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেই থেকে কৃষকেরা সীমানার সামনে বসেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে বন্ধ ছিল দিল্লিতে প্রবেশের সিঙ্ঘু এবং টিকরি সীমানা। সেখানে বড় বড় বোল্ডার, বালির বস্তা, পেরেক পুঁতে রাখা হয়।