রাজনাথ সিংহ। ফাইল চিত্র
চিন নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষের সরাসরি জবাব এড়িয়ে ফের ‘হুঙ্কার’ পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে। করোনার কঠিন সঙ্কটের সময়েও দ্বিতীয় দফার মোদী সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সেই ‘৫৬ ইঞ্চি ছাতি’-র ভাবমূর্তিই তুলে ধরার চেষ্টা করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেমন পশ্চিমবঙ্গ, বিহারের জন্য ‘ভার্চুয়াল জনসভা’ করেছিলেন, তেমনই রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের জনতার জন্য তা করলেন রাজনাথ। সেখানে তিনি বলেন, “কূটনৈতিক চ্যানেলে এবং সেনাবাহিনীর মাধ্যমে চিনের সঙ্গে কথা চলছে। সমস্যা মেটাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে চিনও। বিরোধীদের স্পষ্ট বলতে চাই যে, এ বিষয়ে কাউকে অন্ধকারে রাখবে না সরকার।…যে কোনও পরিস্থিতিতে দেশের সম্মানের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপসের প্রশ্ন নেই।”
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বার বার প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতের জমির কিছুটা চিনা সেনা ইতিমধ্যেই দখল করেছে কি না? কংগ্রেসের অভিযোগ, এ বিষয়ে দেশকে অন্ধকারে রাখছে সরকার। চিনের সঙ্গে সেনার এই ‘রণং দেহি’ মেজাজের সময়ে মোদীর ৫৬ ইঞ্চির ছাতি চুপসে গেল কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধীদের একাংশ। এ দিন কার্যত তার উত্তর দিলেন রাজনাথ। তবে ভারতের জমি সত্যিই জবরদখল হয়েছে কি না, সে বিষয়ে চুপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যদিও শনিবারই সেনা প্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণের দাবি ছিল, চিনের সঙ্গে সীমান্ত-সমস্যা নিয়ন্ত্রণে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পাশ থেকে সেনা কমাচ্ছে দু’দেশই।
করোনার এই আবহে কাশ্মীর ঘিরে ‘দেশপ্রেমের আবেগ’ এ দিন ফের উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেন রাজনাথ। তাঁর দাবি, খুব তাড়াতাড়িই ফের পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকতে চাইবে না পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ।
৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলকে মোদী সরকারের অন্যতম সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, আগে পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস-এর পতাকা তুলে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতার দাবি তোলা হতো। কিন্তু সংসদে ওই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পরে এখন চোখে পড়ছে ভারতের জাতীয় পতাকাই। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় জম্মু ও কাশ্মীরের চেহারা এবং ভবিষ্যৎ বদলে যাবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। বিরোধীদের অবশ্য প্রশ্ন, ব্যর্থ লকডাউন আর বিধ্বস্ত অর্থনীতি থেকে নজর ঘোরাতেই কি এখন ফের ‘জাতীয়তাবাদের জিগির’ তোলার চেষ্টা সরকারের?