অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্যোগের মেঘ কাটিয়ে ছন্দে ফেরার মুখে সিকিম। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। আবহাওয়াও অনুকূল হয়েছে বিপর্যস্ত রাজ্যে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই রাজ্যের স্কুলগুলির জন্য নয়া নির্দেশিকা জারি করল সিকিম সরকার। সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয় যে, সেখানকার সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলগুলি যেন অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা শুরু করে।
তবে অনলাইন ক্লাসের সুযোগ-সুবিধা পাবে শুধুমাত্র উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা। সিকিমের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসের সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিকিমের শিক্ষা দফতরের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বহু দিন সিকিমের সমস্ত স্কুল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে। রাজ্যের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। তাই সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুলের তরফে যেন উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস নেওয়া হয় সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪ অক্টোবর সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হলে চার দিনের জন্য রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সিকিম সরকার। পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিকিম সরকার জানিয়েছে, গত বুধবারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মোট ৮৫ হাজার ৮৭০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে রাজ্যের অন্তত ১,৭১৬টি বাড়ি। ২,৫৬৩ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে মোট ২,৭৬৪ জনকে। এই মুহূর্তে সিকিমে মোট ২৬টি ত্রাণশিবির খোলা রয়েছে। ওই ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন অন্তত ৬,৫০৫ জন মানুষ।
রাজ্যের মোট ১৪টি সেতু দুর্যোগের কারণে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, সিকিমে ১০৫ জন নিখোঁজ। আহতের সংখ্যা ২৬। বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।