শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের অভিযোগ গত ১২ নভেম্বর আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। ফাইল চিত্র।
শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনের মামলার অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে জেরা করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছে দিল্লি পুলিশ। গত ১৮ মে রাত ১০টা নাগাদ শ্রদ্ধাকে খুনের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা আফতাব কী কী করেছিলেন, তাঁকে জেরা করে তার অনেক বিবরণও জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
তবে আফতাবের বয়ানে এখনও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে বলে দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতের নার্কো অ্যানালিসিস টেস্ট করানো হলে অনেক ধোঁয়াশা কাটতে পারে বলে আমরা আশা করছি।’’ প্রসঙ্গত, বুধবার দিল্লির সাকেত আদালত আফতাবের নার্কো পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে দিল্লি পুলিশকে। সাধারণত বড় ধরনের অপরাধে সন্দেহভাজনকে নার্কো পরীক্ষা করানো হয়।
মুম্বই বিস্ফোরণে ধৃত পাক নাগরিক আজমল কসাবের এই পরীক্ষা করানো হয়েছিল। ‘নার্কো অ্যানালিসিস টেস্ট’-এ ধৃতের জবানবন্দি আদালতগ্রাহ্য না হলেও এ ক্ষেত্রে তদন্তের সুবিধা হয়। বিচ্ছিন্ন সূত্রগুলি ‘জোড়া লাগাতে’ পারেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। আফতাবের বয়ানের অসঙ্গতিগুলি ভরাট করতে নার্কো পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার ১০ দিন আগে অর্থাৎ, ৮ মে শ্রদ্ধাকে খুন করার আসল ছক কষেছিলেন তিনি। তবে ওই দিন শ্রদ্ধা ‘আবেগপ্রবণ’ হয়ে পড়ায় প্রেমিকাকে খুন করতে পারেননি আফতাব। এর পর ১৪ মে, ঘটনার চার দিন আগে মেহরৌলীর ওই ফ্ল্যাটে চলে এসেছিলেন তাঁরা। ঘটনার দিন রাতে কথা কাটাকাটি শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। তার পরেই খুনের ঘটনা।
শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর সে রাতে তাঁর দেহ আফতাব টুকরো করেননি বলে তদন্তে জানা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। হোটেল ম্যানেজমেন্টের ছাত্র আফতাব এবং পর তাঁর মাংস সংরক্ষণ প্রশিক্ষণের শিক্ষা কাজে লাগান। ফ্রিজ আর ছুরি কিনে আনেন ফ্ল্যাটে। শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে আলাদা আলাদা প্লাস্টিকে মুড়ে রাখেন ফ্রিজে।
গুগ্ল করে রক্তের দাগ মোছার কৌশলও জেনেছিলেন আফতাব। ফরেন্সিক পরীক্ষার থেকে নিষ্কৃতি পেতে ব্যবহার করেছিলেন সালফার হাইপোক্লোরিক অ্যাসিড। লক্ষ্মণ নামে আফতাবের এক বন্ধু এ বিষয়ে কিছু জানতে পারেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের একাংশের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বিষয়ে সূত্রের খোঁজ করছে দিল্লি পুলিশ।