যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
সরকারি জমি দখল করলে ওঁদের কি পুজো করা হবে? এক সাক্ষাৎকারে রাজ্যে মাফিয়াদের বিরুদ্ধে বুলডোজ়ার-রাজের পক্ষে এ ভাবেই সরব হলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, রাজ্যের উন্নয়নের পথে যাঁরা বাধা হয়ে দাঁড়াবেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই সরকার ব্যবস্থা নেবে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে রাজ্যের মাফিয়া-রাজ এবং তা রুখতে বুলডোজ়ার-রাজ এবং রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেছেন যোগী। তিনি বলেন, “রাজ্যে উন্নয়নের কাজ চলছে। এত বড় রাজ্যে উন্নয়নের কাজে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। আগের মতো তো এখন আর কোদাল, বেলচা দিয়ে কাজ করলে চলবে না!” এর পরই তাঁর মন্তব্য, “রাজ্যে আগে কোনও কাজ অনুমোদিত হলেই মাফিয়ারা এসে সেই জমি দখল করতেন। কিন্তু আগের সরকার এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপই করত না। মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হত না।”
যোগীকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তাঁর সরকার মাফিয়াদের ঘরবাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন? এর উত্তরে যোগী বলেন, “সরকারি জমি দখল করবে আর ওদের পুজো করব? রাজ্যর মানুষ মাফিয়া এবং দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান। আর সরকার সেটাই করছে।” তবে বেছে বেছে সংখ্যালঘু অপরাধীদের ঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বলে যে অভিযোগ তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে, সেটি সম্পূর্ণ খারিজ করেছেন যোগী। তিনি বলেন, “আইন সকলের জন্য সমান। এখানে জাত, ধর্ম দেখা হয় না। রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়াই সবচেয়ে বড় বিষয়।”
যোগী দাবি করেছেন, রাজ্যে বিজেপি সরকার আসার পর গত ছ’বছরে কোনও দাঙ্গা বা হিংসার ঘটনা ঘটেনি। কার্ফুও জারি করা হয়নি। শুধু তাই-ই নয়, যোগী আরও দাবি করেছেন যে, উত্তরপ্রদেশে সব উৎসবই পালন করা হয় এবং তা শান্তিপূর্ণ ভাবে। যোগীর কথায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে যা হয়, তা উত্তরপ্রদেশের কোথাও হয়ে না বলেও দাবি করেছেন যোগী। তাঁর কথায়, “প্রত্যেক মানুষের নির্বাচনে লড়ার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। যদি কোনও বিরোধী প্রার্থীর জেতার ক্ষমতা থাকে, তা হলে তা মেনে নেওয়া উচিত।”
রাজ্যে একের পর এক দুষ্কৃতীদের ‘এনকাউন্টার’ নিয়ে বার বারই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর যোগী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন যে, রাজ্যে কোনও অপরাধ বরদাস্ত করা হবে না। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নেওয়া হবে। যোগীর রাজ্যে ‘এনকাউন্টার’ নিয়ে সংসদেও প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীরা ‘ভুয়ো এনকাউন্টারের’ অভিযোগ তুলেছেন বার বার।