Manipur Issus Shoot at Sight Order

চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ মণিপুরে, উদ্বেগ জানিয়ে টুইট বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর

মণিপুরের পরিস্থিতি ক্রমশ আরও উত্তপ্ত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছিল সেনা। রাস্তায় টহল দিচ্ছিল র‌্যাফও। এ বার চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি করা হল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইম্ফল শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ১৯:৩৫
Share:

মণিপুরে অশান্তির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর। ছবি— পিটিআই।

হিংসা-বিধ্বস্ত মণিপুরে চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ জারি করল রাজ্য সরকার। রাজ্যপালের স্বীকৃতি পাওয়া সরকারি ওই ফরমানে চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে, যখন আর কোনও উপায় কাজে আসবে না, সেই সময় দেখামাত্র গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নেমেছে সেনার ৫৫টি কলম। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্যোগী হয়ে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।

Advertisement

মণিপুর হাই কোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে আগুন জ্বলছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। সেনা নামিয়েও পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে মণিপুরের রাজ্যপাল সমস্ত জেলাশাসক, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটদের চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে দেখামাত্র গুলি চালানোর সরকারি নির্দেশে সিলমোহর দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, হিংসা-বিধ্বস্ত রাজ্যে তারা ৯ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছেন। আরও বহু মানুষকে উদ্ধার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ ‘শুট অ্যাট সাইট’ নির্দেশ জারি করে সরকার।

মণিপুরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজনৈতিক নেতানেত্রীরাও। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘‘মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আমি গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। এটা রাজনীতি করার সময় নয়। রাজনীতি এবং নির্বাচন অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু এখন সর্বপ্রথম মণিপুরকে রক্ষা করতে হবে। আমি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মণিপুরকে দেখার আর্জি জানাচ্ছি। শান্তি ফেরানোর আহ্বান করছি।’’ এর পাশাপাশি মণিপুরের বাসিন্দাদেরও শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি টুইটে লিখেছেন, ‘‘আজ যদি আমরা মনুষ্যত্বকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিই, তা হলে আগামী কাল মানুষও অবশিষ্ট থাকবে না।’’

Advertisement

মণিপুরের পরিস্থিতির দিকে প্রধানমন্ত্রীকে নজর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। কংগ্রেসের দাবি, মণিপুরের অবস্থা ভুলে মোদী এবং বিজেপি কর্নাটকে ভোট জেতায় মগ্ন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও টুইটে রাজনীতি এবং ভোটের ঊর্ধ্বে ওঠার আবেদন জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে মমতা সরাসরি কারও নাম না-করলেও তাঁর ইঙ্গিত সম্ভবত কর্নাটকে বিজেপির ভোটপ্রচারের দিকেই। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এ বীরেন সিংহের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

গত বুধবার চূড়াচাঁদপুর জেলার তোরবাঙে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন মণিপুর’ (এটিএসইউএম) ‘আদিবাসী সংহতি পদযাত্রা’র ডাক দেয়। সম্প্রতি হাই কোর্ট মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় আনা যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টের সেই নির্দেশের বিরোধিতায় নেমেছে এটিএসইউএম। বুধবারের সুবিশাল এক পদযাত্রা থেকে নতুন করে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে থাকে। পরিস্থিতি সামলাতে প্রথমে জারি হয় কারফিউ। কিন্তু তাতেও হিংসায় লাগাম পরানো যায়নি। বৃহস্পতিবার সেনা নামে। তার পরেই এল পরিস্থিতি বিবেচনায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement