প্রাক্তন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে মুম্বই হাইকোর্ট। ছবি: সংগৃহীত।
শিনা বরা হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারির চার বছরেরও বেশি সময় পর জামিন পেলেন প্রাক্তন মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়। দু’লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে বৃহস্পতিবার পিটারের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে বম্বে হাইকোর্ট।
এ দিন পিটারের জামিন মঞ্জুর করে বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি নিতিন সামব্রে জানিয়েছেন, সিবিআই দাবি করলেও এই মামলায় অভিযুক্ত পিটারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ভাবে কোনও প্রমাণ নেই। তবে সিবিআইয়ের অনুরোধে পিটারের জামিনের আদেশের বিরুদ্ধে আপাতত ছ’সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি। ওই সময়ের মধ্যে পিটারের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে সিবিআই। ফলে কাগজেকলমে জামিন পেলেও এখনই জেলের বাইরে আসতে পারছেন না পিটার।
২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল একটি গাড়ির মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় পিটারের স্ত্রী ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের আগের পক্ষের মেয়ে ২৪ বছরের শিনা বরাকে। ২০১৫-তে ইন্দ্রাণীর গাড়ির চালক শ্যামবর রাইকে একটি অন্য মামলায় গ্রেফতার করা হলে সেই খুনের কথা প্রকাশ্যে এসে পড়ে। এই ঘটনায় ইন্দ্রাণী ছাড়া আরও দুই অভিযুক্ত হলেন ইন্দ্রাণীর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না এবং তাঁর গাড়ির প্রাক্তন চালক শ্যামবর রাই। খুনের পর মুম্বই থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে রায়গড়ের পেনের জঙ্গলে শিনার দেহ পুঁতে দেওয়া হয়। এর পর ২০১৫-র অগস্টে ইন্দ্রাণী, সঞ্জীব এবং শ্যামবরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বিভাজনের সময় এ দেশে থেকে গিয়ে মুসলিমরা দয়া করেননি, বললেন আদিত্যনাথ
এই মামলায় প্রথম থেকেই সিবিআইয়ের সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিলেন না পিটার। ২০১৫-র ১৯ নভেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, শিনা এবং পিটারের আগের পক্ষের ছেলে রাহুলের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি পিটার এবং ইন্দ্রাণী। এই বিষয়টি নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে ঝগড়াও হয়। সম্পত্তি নিয়ে বিবাদই সেই বাদানুবাদকে চরমে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুন: মাকে খুন করে পুরুষসঙ্গীকে নিয়ে আন্দামানে ছুটি কাটাতে গেলেন বেঙ্গালুরুর তরুণী
সিবিআইয়ের আরও দাবি, শিনাকে খুনের চক্রান্তের কথাও সবটাই জানতেন পিটার। কোথায় শিনাকে খুন করা হবে এবং তাঁর দেহ কোথায় লোপাট করা হবে, তা-ও ‘রেকি’ করে পিটারকে জানিয়েছিলেন এই মামলার মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী। তবে এ দিন পিটারের জামিনের আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি সামব্রে বলেন, “যখন ওই ঘটনাটি ঘটেছিল, সে সময় আবেদনকারী (পিটার) ভারতে ছিলেন না। এই মামলার শুনানি এখনও চলছে। তা ছাড়া আবেদনকারী সে সময় থেকে চার বছরের বেশি সময় জেলে কাটিয়েছেন এবং সম্প্রতি তাঁর বাইপাস সার্জারিও হয়েছে।”
জামিনের নির্দেশ পেলেও জেলের বাইরে গিয়ে অবশ্য মেয়ে নিধি, ছেলে রাহুল এবং এই মামলার অন্যান্য সাক্ষীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না পিটার। আদালতের পর্যবেক্ষণ, তেমনটা হলে হয়তো এই মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন পিটার মুখোপাধ্যায়।