(বাঁ দিকে) শিনা বরা এবং ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শিনা বরা হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় বিদেশে যেতে চান। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। সোমবার ওই মামলায় সিবিআইয়ের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চ। বিদেশযাত্রার জন্য মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত থেকে অনুমতি পান ইন্দ্রাণী। তা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্ট যায় সিবিআই। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের রায় যায় সিবিআইয়ের পক্ষে। নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেয় আদালত। এর পর হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পুনরায় সুপ্রিম কোর্টে যান ইন্দ্রাণী।
শিনা বরা হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত ২০১২ সালে। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে সিবিআই। নিজের মেয়ে খুনের অভিযোগে ২০১৫ সালে গ্রেফতার হন ইন্দ্রাণী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ২০১২ সালের এপ্রিলে প্রাক্তন স্বামী এবং গাড়িচালকের সঙ্গে মিলিত পরিকল্পনায় শিনাকে খুন করেছেন তিনি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৫ সালে গ্রেফতার হন ইন্দ্রাণী। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইন্দ্রাণী। প্রায় সাত বছর জেলে থাকার পর ২০২২ সালের জামিন পান তিনি। চলতি বছরে মহারাষ্ট্রের এক বিশেষ আদালতে বিদেশ যাত্রার আবেদন জানান শিনা বরা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত। গত ১৯ জুলাই তাতে অনুমতি দেয় আদালত। স্পেন এবং ব্রিটেন মিলিয়ে তিন মাসের মধ্যে ১০ দিনের বিদেশযাত্রা সম্পন্ন করার অনুমতি পান তিনি। ওই মামলা এ বার হাই কোর্টে হয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়াল।
শিনা বরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসে ইন্দ্রাণীর গাড়িচালক শ্যামবর রাই গ্রেফতার হওয়ার পর। পুলিশের কাছে তিনি জানিয়েছিলেন, শিনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন ইন্দ্রাণী। ২০১২-তে নিখোঁজ হয়ে যান শিনা। গুয়াহাটিতে দাদু-দিদার কাছে থাকতেন শিনা এবং তাঁর ভাই মিখাইল। ইন্দ্রাণী ছেলেমেয়েকে ছেড়ে মুম্বইয়ে চলে যান। সেখানে পিটার মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন। শিনা তা জানতে পেরে মুম্বইয়ে ইন্দ্রাণীর কাছে হাজির হন। ইন্দ্রাণী তখন পিটার এবং তাঁর পরিচিতদের কাছে শিনাকে নিজের বোন বলে পরিচয় দেন।
পরে তদন্তে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে বাড়ির জন্য ইন্দ্রাণীকে হুমকি দিতেন শিনা। এর মধ্যেই শিনার সঙ্গে পিটারের ছেলে রাহুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শিনা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর রাহুলকে জানানো হয় পড়াশোনার জন্য বিদেশে গিয়েছেন শিনা। প্রায় তিন বছর পর ২০১৫-তে শিনার হত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এই ঘটনায় ইন্দ্রাণী, পিটার এবং ইন্দ্রাণীর প্রথম পক্ষের স্বামী সঞ্জীব খন্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে একে একে সকলেই জামিন পেয়েছেন।