ঠিক কোন নেতৃত্বের কাছে বার্তা পাঠাতে চাইছেন শশী তারুর? ফাইল চিত্র ।
তিনি যদি দলের নেতৃত্বে থাকতেন তা হলে কংগ্রেসকে নয়, বিরোধী ঐক্যের আহ্বায়ক হওয়ার সুযোগ দিতেন অন্য কোনও দলকে। কোনও আঞ্চলিক দলকেই বিরোধীদের এক করতে উৎসাহিত করতেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে যে বিরোধী ঐক্য তৈরি হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর।
রবিবার এক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন শশী। সেখানে তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ জানান, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজকে নিয়ে সম্প্রতি যে বিরোধী ঐক্যের তরঙ্গ উঠেছে তাকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, কংগ্রেস সেই কারণ যার জন্য অন্যান্য দল একজোট হবে। তবে তিনি যদি দলের নেতৃত্বে থাকতেন তা হলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জোটের আহ্বায়কের ভূমিকা পালন করার জন্য কোনও আঞ্চলিক দলকে উৎসাহিত করতেন। তারুর আরও জানান, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে এই মুহূর্তে বিরোধী দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করা সবচেয়ে জরুরি।
তিনি বলেন, ‘‘এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, জাতীয় রাজনীতিতে আমরাই একমাত্র বিরোধী দল। লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ২০০টি এমন আসন রয়েছে যেখানে কংগ্রেস এবং বিজেপির সরাসরি লড়াই হবে। অন্যান্য সমস্ত বিরোধী দল মূলত কোনও একটি বা দু’টি নির্দিষ্ট রাজ্যে শক্তিশালী। বর্তমানে আমরা সেই ভিত্তি হব যাকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা একত্রিত হবে। তবে আমি যদি দলীয় নেতৃত্বে থাকতাম, আমি আহ্বায়ক হওয়া নিয়ে মাথা ঘামাতাম না। বিরোধী জোটের আহ্বায়কের ভূমিকা পালনের জন্য আঞ্চলিক কোনও দলকে উৎসাহিত করতাম।’’
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তারুর জানান, ২০১৯ সালের রাহুলের করা ‘মোদী-মন্তব্যের’ জেরে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। যে কারণে লোকসভায় রাহুলের সাংসদ পদও খারিজ করা হয়েছে। আর এর ফলে দেশ জুড়ে ‘বিরোধী ঐক্যের আশ্চর্যজনক তরঙ্গ’ তৈরি হয়েছে। এবং অনেক দলই এই মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার গুরুত্ব বুঝতে পারছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে ছাড়াই বিরোধী জোট তৈরি করতে উদ্যত হয়েছিল বিভিন্ন দল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, জোট হলেও তা হবে কংগ্রেসকে ছাড়াই। কিন্তু রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের পর তৃণমূল, আম আদমি পার্টি, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি-সহ অন্যান্য বিরোধী দল রাহুলের সমর্থনে কংগ্রেসের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আর এই জোটকেই বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যূত করতে কাজে লাগাতে চাইছেন কংগ্রেস সাংসদ তারুর।
শশী কংগ্রেসের সভাপতি নন। মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দৌড়ে খাকলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে হারিয়ে কংগ্রেস সভাপতি হন খড়্গেই। আর সেই কারণেই জোটের আহ্বায়ক কে হবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও তারুরের কাছে নেই। কিন্তু তারুরের এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠছে, ঠিক কোন নেতৃত্বের কাছে বার্তা পাঠাতে চাইছেন তিনি? কংগ্রেস সভাপতি খড়্গেকে, না কংগ্রেসের ‘আসল নেতৃত্ব’ রাহুলকে!
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তারুর এ-ও দাবি করেছেন, বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে ভোট ভাগ হওয়া বন্ধ করে দিলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া কঠিন হতে পারে।