Indipendence day celebration in Manipur

স্বাধীনতা দিবসের আগে প্রধানমন্ত্রীর ‘চোখের মণি’ মণিপুরকে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে দিল কেন্দ্র

রবিবারই মণিপুরের পাঁচটি জেলায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করেছে মণিপুরের নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে খাস রাজধানী ইম্ফলও রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৩ ১৭:০১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সংসদে মণিপুর নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন মণিপুর তাঁর ‘জিগর কা টুকরা’। যার আক্ষরিক অর্থ ‘হৃদয়ের কণা’ হলেও বাংলায় এই একই অর্থে ব্যবহার করা হয় ‘নয়নমণি’ শব্দবন্ধটি। মোদীর ‘চোখের মণি’ সেই মণিপুরে এখনও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তির আগুন জ্বলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। তার মধ্যেই মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে শুরু হল স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি। অস্থায়ী লোহার প্রাচীর তুলে হোর্ডিং লাগিয়ে শুরু হল স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া। গত প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে অশান্তি চলতে থাকা রাজ্যটিকে মুড়ে ফেলা হল কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে।

Advertisement

রবিবারই মণিপুরের পাঁচটি জেলায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করেছে মণিপুরের নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে খাস রাজধানী ইম্ফলও রয়েছে। বিষ্ণুপুর, চুড়াচাঁদপুর, থুবল ছাড়া পূর্ব এবং পশ্চিম ইম্ফলে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। শনিবার থেকে রবিবারের মধ্যে এই পাঁচ জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র, প্রচুর গোলাগুলি এবং আটটি বিস্ফোরক। এ ছাড়াও এই পাঁচ জেলা থেকে প্রায় ২৭ কেজি ওজনের ২৫টি আফিমের প্যাকেটও উদ্ধার করেছে তারা। রবিবার থেকে ইম্ফলের পাশাপাশি এই পাঁচ জেলার মধ্যে চূড়াচাঁদপুরেও শুরু হয়েছে স্বাধীনতা দিবস উ্‌যাপনের প্রস্তুতি। শনিবার এখানকার টুইবোং এলাকার শান্তি ময়দানে আয়োজন করা হয়েছিল স্বাধীনতার দিবসের মহড়ার। সেই প্রস্তুতিতে যোগ দিয়েছিলে বিএসএফ থেকে শুরু করে মণিপুর পুলিশ, ছাত্রছাত্রী এবং আসাম রাইফেলস। নিরাপত্তার জন্য জেলায় জেলায় তৈরি করা হয়েছে অসংখ্য চেক পোস্ট। আইন না মানার জন্য গত কয়েক দিনে আটকও করা হয়েছে ১৫৮০ জনকে।

এ দিকে মণিপুরে বহু জঙ্গি গোষ্ঠী ইতিমধ্যে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে স্বাধীনতা দিবসের দিন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। মণিপুরের কোঅর্ডিনেটিং কমিটির বহু বেআইনি সংগঠনও স্বাধীনতা দিবসের দিন মধ্যরাত ১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এই কোঅর্ডিনেটিং কনমিটির মধ্যে রয়েছে মণিপুরের ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএনএলএফ), পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এবং প্রিপাক। এ ছাড়া দু’টি নিষিদ্ধ সংগঠনও ১৫ অগস্টের দিন রাজ্য জুড়ে বন্‌ধের ডাক দিয়েছে। তবে এ সবের মধ্যেই পুরোদমে শুরু হয়েছে কেন্দ্রের তরফে স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনের প্রস্তুতিও।

Advertisement

সম্প্রতি সংসদে বাদল অধিবেশে মণিপুর নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন বিরোধীরা। বিরোধীদের প্রস্তাবের জবাবি বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, মণিপুরে খুব শীঘ্রই শান্তি ফিরবে। অশান্তির দায় অনেকটাই মণিপুরের পুরনো শাসক কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে মোদী বলেছিলেন, মণিপুর আমার চোখের মণি। এই সরকার গত ছ’বছরে মণিপুরের জন্য অনেক কিছুই করেছে যা পুরনো শাসক করে দেখাতে পারেনি।

মণিপুরের অশান্তির মূলে আদতে জাতিগত দ্বন্দ্ব। ইম্ফলের মোট জনবসতির ৫৩ শতাংশ মেইতেই সম্প্রদায়। এঁদের দাবি তাঁদের তফসিলি উপজাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হোক। যদিও মেইতেইদের এই দাবি মানতে নারাজ মণিপুরের পাহাড়ের বাসিন্দা নাগা এবং কুকিরা। মণিপুরের এই দুই উপজাতিদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের কিছু বেশি। মণিপুরে সংঘর্ষ এবং অশান্তি মূলত এই উপজাতিদের মধ্যেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement