দলাই বার বার চিন থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন। ফাইল চিত্র।
বুদ্ধগয়ায় সফরে এসেছেন বৌদ্ধদের আধ্যাত্মিক গুরু দলাই লামা। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার সেখানে রোজ বক্তৃতা দেওয়ার কথা তাঁর। এর মধ্যেই গয়ায় এক চিনা গুপ্তচরের লুকিয়ে থাকার খবর পেলেন গোয়েন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, চিন থেকে আসা ওই গুপ্তচর দলাই লামা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেই এসেছেন ভারতে।
ওই চিনা মহিলাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। বিহারে দলাইয়ের সফর চলাকালীনই শুরু হয়েছে এই খোঁজ। গোয়েন্দাদের অনুমান, ওই মহিলাই চিনের গুপ্তচর হতে পারেন। বৃহস্পতিবার তাঁর একটি আনুমানিক স্কেচ প্রকাশ করে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে বিহারের পুলিশ। ছবির সঙ্গে ওই মহিলার নামও জানিয়েছে তারা। গয়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গত দু’ বছর ধরেই এ ব্যাপারে নানারকম তথ্য পাচ্ছিলেন তাঁরা। তবে এতদিনে জানতে পেরেছেন চিন থেকে আসা ওই মহিলা গয়াতেই থাকছিলেন।।
নাম সং জিয়াওলান। তবে নাম জানা গেলেও চিনা চর সংয়ের ‘লোকেশন’ জানা যায়নি। গয়ার পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘যে হেতু ওঁকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাই নানারকম সন্দেহই উঠে আসছে। চিনা গুপ্তচর হওয়ার সম্ভাবনাও তাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ তবে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর থেকে পুলিশ নিশ্চিত, ওই চিনা মহিলার গতিবিধি যথেষ্ট সন্দেহ উদ্রেককারী। এমনকি, ওই মহিলা দলাই লামার উপর নজর রাখতে চিন থেকে ভারতে এসেছেন বলেও মনে করছে পুলিশের একটি মহল।
প্রসঙ্গত চিনের হাত থেকে বাঁচতেই ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন দলাই। তিব্বতের এই আধ্যাত্মিক গুরুর উত্তরসূরি বাছতে চায় চিন। কারণ, তারা মনে করলে দলাইয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকলেই তিব্বতিদেরও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অন্য দিকে তিব্বতিরা মনে করেন দলাই লামা নিজের মৃত্যু এবং পুনর্জন্ম নিজেই নিয়ন্ত্রণ করেন। এই নিয়ে দু’তরফের সঙ্ঘাতের মধ্যেই বারবার চিন থেকে জীবননাশের হুমকি পেয়েছেন দলাই। যার জেরে তাঁর ভারতে আসা। কিন্তু গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ভারতেও দলাইয়ের উপর নজর রাখছে চিন। সে জন্যই চিন থেকে ওই মহিলা গুপ্তচরকে পাঠানো হয়েছে গয়ায়। কাকতালীয় ভাবে এখন গয়ায় এসে পৌঁছেছেন দলাইও।
তবে বিহারের কৃষি মন্ত্রী সরকারের তরফে বলেছেন, ‘‘পুলিশ অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে কাজে নেমেছে। ওই চিনা মহিলাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে তারা। ছবি এবং নাম প্রকাশের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দলাই লামার নিরাপত্তা যাতে কোনও ভাবেই বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে।’’