বোলপুর (শান্তিনিকেতন)-এর পাশাপাশি বারসোই এবং মালদহ স্টেশনে স্টপেজ হবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের স্টপেজের সংখ্যা বাড়াল রেল মন্ত্রক। ঘটনাচক্রে, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের চিঠির পরেই।
বৃহস্পতিবার রেলের তরফে ‘হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি’ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ‘চূড়ান্ত পরিবর্তিত সূচি’ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ দিনে বোলপুর (শান্তিনিকেতন), মালদহ টাউন এবং বারসোই স্টেশনে দাঁড়াবে এই সেমি হাইস্পিড ট্রেন। তবে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেও কবে থেকে সাধারণ যাত্রীদের জন্য ট্রেন চলবে তা ‘চূড়ান্ত পরিবর্তিত সূচি’তে জানানো হয়নি।
প্রাথমিক ভাবে রেল মন্ত্রক জানিয়েছিল, হাওড়া এবং নিউ জলপাইগুড়ির মাঝে কেবল মাত্র মালদহ টাউনে দাঁড়াবে বন্দে ভারত। কিন্তু বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত এর পর রেলমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মক্ষেত্র’ বোলপুর (শান্তিনিকেতন)-এ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের স্টপেজ চেয়েছিলেন। তাঁর দাবি, বছরভর দেশ-বিদেশের বহু পড়ুয়া এবং পর্যটক শান্তিনিকেতনে আসেন। কিন্তু বোলপুর (শান্তিনিকেতন)-এ নেই বিমান যোগাযোগ। তাই বন্দে ভারত সেখানে দাঁড়ালে উপকৃত হবেন বহু মানুষ।
সাধারণ ভাবে দ্রুতগামী বা অতি দ্রুতগামী ট্রেনের স্টপেজের সংখ্যা একটির বেশি থাকে না। কিন্তু রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে স্টপেজ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি আসতে থাকে। সরকারের পক্ষেও সেই দাবি না-মানা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন, কলকাতা থেকে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস চালু হওয়ার সময় স্টপেজের সংখ্যা ছিল একটি। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার আগ্রহ এবং দাবিতে ক্রমাগত স্টপেজের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে রাজধানীর সফরের সময় প্রলম্বিত হয়ে যায়। বন্দে ভারতের ক্ষেত্রে যাত্রা শুরুর আগেই সেই আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। বোলপুর (শান্তিনিকেতন) রেলের মানচিত্রে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে হেতু শান্তিনিকেতনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের নাম জড়িয়ে, তাই রেলকে এই স্টেশনকে গুরুত্ব দিতে হয়েছে। বোলপুর নামের পাশে বন্ধনীতে শান্তিনিকেতনের উল্লেখ রাখা হয়েছে। যাতে দেশি এবং বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে কোনও বিভ্রান্তি তৈরি না হয়। রেলের কাছে বন্দে ভারতকে সেই বোলপুরে দাঁড় করানোর দাবি জানানো হল রাজনৈতিক দলগুলির তরফে। দেখা গেল রেল সেই দাবিতে গুরুত্ব দিতে হল।
রেল মন্ত্রকের নতুন বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, বুধবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ছ’দিন চলবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। হাওড়া থেকে ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছবে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে। আবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বিকেল ৩টে ৫ মিনিটে ছেড়ে রাত ১০টা ৩৫-এ হাওড়ায় ঢুকবে।