অমরাবতীকে রাজধানী হিসাবে গড়ে তোলা নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
আগামী ছ’মাসের মধ্যে অমরাবতীকে অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ণাঙ্গ রাজধানী হিসাবে গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল অন্ধ্র হাই কোর্ট। কিন্তু সোমবার সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বিচারপতি বিভি নাগারত্নের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘নয়া শহর নির্মাণের পরিকল্পনাকারীর ভূমিকা আদালত নিতে পারে না।’’ অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্টের রায় সংবিধান-বর্ণিত সরকার এবং বিচারবিভাগের ক্ষমতার বিভাজনরেখা লঙ্ঘন করেছে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে অন্ধ্র বিভাজনের সময় রাজধানী হায়দরাবাদকে নয়া রাজ্য তেলঙ্গানার রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছিল। এর পর ২০১৫ সালে খণ্ডিত অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলুগু দেশম প্রধান চন্ধ্রবাবু নায়ডু সে রাজ্যের বাণিজ্যিক রাজধানী বিজয়ওয়াড়ার ৪০ কিলোমিটার দূরে অমরাবতী শহরটিকে নতুন রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার ‘মাস্টার প্ল্যান’ ঘোষণা করেন। সে বছরই অমরাবতীকে অন্ধ্রের নয়া রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
অন্ধ্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতা জগন্মোহন সে সময়ই চন্দ্রবাবুর ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিলেন। অমরাবতীতে অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজধানী হবে, সে কথা আগাম জেনে প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি সেখানে জমি কিনে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটে জিতে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে জগন্মোহন ওই জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগের ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি অমরাবতীতে রাজধানী গড়ার প্রক্রিয়াও শ্লথ হয়ে যায়।
এর পর ২০২০ সালে অমরাবতীর পাশাপাশি বিশাখাপত্তনম এবং কুর্নুলকে রাজধানী’ করে সরকারি দফতরগুলি ওই তিন শহরে বণ্টনের পরিকল্পনা ঘোষিত হয়। অন্ধ্র বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে জানানো হয়, রাজ্যের প্রধান সচিবালয় হবে উপকূলীয় শহর বিশাখাপত্তনে। অমরাবতীতে হবে বিধানসভা। অন্ধ্র হাই কোর্টের ঠিকানা হবে রায়লসীমা অঞ্চলের কুর্নুলে।
কিন্তু অমরাবতীতে ‘পূর্ণাঙ্গ রাজধানী’ নির্মাণের দাবিতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় অন্ধ্র হাই কোর্টে। সেই আবেদন মেনে গত মার্চ মাসে অন্ধ্র হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, আগামী ছ’মাসের মধ্যে অমরাবতীকে পূর্ণাঙ্গ রাজধানী হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। নির্মাণ করতে হবে রাজধানী শহরের উপযোগী নাগরিক পরিকাঠামো। হাই কোর্টের সেই নির্দেশেকেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল জগন সরকার।