প্রতীকী ছবি।
সারদা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)-র আধিকারিকদের একাংশও জড়িত? এমন অভিযোগ আগেও উঠেছিল। এ বার সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে পড়ল সিবিআই। সোমবার মুম্বইয়ে ৩ সেবি আধিকারিকের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালালেন সিবিআই আধিকারিকরা। তবে তল্লাশিতে কী তথ্য উঠে এসেছে বা কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সিবিআই-এর তরফে কিছু জানানো হয়নি।
সিবিআই সূত্রে খবর, সোমবার ৩ সেবি পদস্থ কর্তার বাড়ি ও অফিস মিলিয়ে মোট ৬টি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাঁরা চিফ জেনারেল ম্যানেজার এবং জেনারেল ম্যানেজার পদমর্যাদার আধিকারিক। দীর্ঘক্ষণ ধরে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা ওই সব ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়েছেন। খতিয়ে দেখেছেন বহু নথিপত্র। তাতে কোনও অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে কি না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি সিবিআই।
চড়া সুদের লোভ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অসম-সহ উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা তুলেছিল সুদীপ্ত সেনের সারদা গোষ্ঠী। কিন্তু ২০১৩ সালের এপ্রিলে এই অর্থলগ্নি সংস্থা ভেঙে পড়ে। নিজেদের গচ্ছিত টাকা ফেরত না পেয়ে বহু বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা করেন। গ্রেফতার করা হয় সারদা কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা তৎকালীন সারদার গ্রুপ মিডিয়া সিইও কুণাল ঘোষ-সহ বেশ কয়েক জনকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। সুদীপ্ত সেন ছাড়া প্রায় সবাই জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলবন্দি সুদীপ্ত সেন। আরও অনেকগুলি মামলার বিচার এখনও চলছে।
বাজার থেকে শেয়ার, বন্ড বা অন্য কোনও স্কিমে টাকা তুলতে হলে সেবি-র অনুমোদন লাগে। বেআইনি ভাবে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টাকা তুললে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার এক্তিয়ারও রয়েছে সেবি-র। কিন্তু সারদা, রোজ ভ্যালি, এমপিএস-সহ অধিকাংশ চিট ফান্ডে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রতারণা সামনে আসার পর দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ সংস্থাই সেই সব অনুমোদনের তোয়াক্কা করেনি। স্বাভাবিক ভাবেই অনুমোদন না নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তোলা হলেও তা কেন সেবি-র নজরে এল না, এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অথবা নজরে এলেও তাতে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, এমন সম্ভাবনাও উঠে আসে। তার পিছনে থাকতে পারে বিপুল অঙ্কের ঘুষের লেনদেনও। সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখতেই এ বার একটি কেন্দ্রীয় নজরদারি সংস্থার দরজায় পৌঁছে গেল কেন্দ্রেরই তদন্তকারী সংস্থা।