বলিউড অভিনেতা সলমন খান। — ফাইল চিত্র।
অভিনেতা সলমন খানকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এ বার গ্রেফতার হলেন তাঁরই আসন্ন ছায়াছবির গীতিকার! অভিযোগ, বিশ্নোই গ্যাংয়ের নাম করে তিনি সলমনকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, সন্দেহের তালিকা থেকে নাম সরাতে নিজেই নিজেকে হুমকিবার্তা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না! কর্নাটক থেকে ধরা পড়লেন ২৪ বছর বয়সি ওই যুবক। সেই গ্রেফতারির গল্প যেন আরও এক সিনেমা!
ঘটনার সূত্রপাত গত ৭ নভেম্বর। মুম্বই ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমের হেল্পলাইন নম্বরে একটি উড়ো বার্তা আসে। তাতে বলা হয়, পাঁচ কোটি টাকা না দিলে সলমন এবং তাঁর আসন্ন ছবির ‘ম্যায় সিকন্দর হুঁ’ গানটির গীতিকার সোহেল পাশাকে খুন করা হবে। আরও বলা হয়, ‘‘গীতিকারের অবস্থা এমন হবে যে তিনি আর কোনও দিনও গান লিখতে পারবেন না! যদি সলমনের সাহস থাকে, তা হলে তাঁকে বাঁচান।’’ এর পরেই নড়েচড়ে বসে মুম্বই পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত। শেষমেশ জানা যায়, হুমকিবার্তাটি পাঠিয়েছেন সোহেল নিজেই! মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে কর্নাটকের রায়চুর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, নিজের লেখা আসন্ন গানটির প্রচারের পাশাপাশি নিজেকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তুলতেই এই রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন যুবক!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে নম্বর থেকে বার্তাটি পাঠানো হয়েছিল, তার টাওয়ারের অবস্থানের সূত্র ধরেই ফোন নম্বরের মালিকের সন্ধান মেলে। তড়িঘড়ি কর্নাটকের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের একটি দল। সেখানে পৌঁছে জানা যায়, ওই ব্যক্তির হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর ব্যবহার করে বার্তাটি পাঠিয়েছে অন্য কেউ। এর পরেই তদন্তে নেমে অভিযুক্ত যুবককে শনাক্ত করে পুলিশ। মঙ্গলবারই তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। আদালতের নির্দেশে আপাতত আগামী দু’দিন পুলিশি হেফাজতে থাকবেন তিনি।
উল্লেখ্য, ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাবা সিদ্দিকির মৃত্যুর পর থেকেই চাপ বেড়েছে সলমনের। অভিযোগ, অতীতে বিশ্নোই সম্প্রদায়ের আবেগে আঘাত করেছেন সলমন ও তাঁর পরিবার। কারণ, কৃষ্ণসার হরিণের পুজো করে বিশ্নোই সম্প্রদায়। আর সেই হরিণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে সলমনের বিরুদ্ধে। ১৯৯৮ সালে জোধপুরে ‘হম সাথ সাথ হ্যায়’ ছবির শুটিংয়ে গিয়ে সলমন কৃষ্ণসার হরিণ হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৮ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে রাজস্থান হাই কোর্ট। পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর। এই রায়ের বিরুদ্ধে সলমন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে সেখানে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। অন্য দিকে, ২০১৫ সাল থেকে জেলে রয়েছেন ‘গ্যাংস্টার’ লরেন্স বিশ্নোই। ২০১৮ সালে জেলে বসেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সুযোগ পেলেই সলমনকে খুন করবেন তিনি। অভিযোগ, বাবা সিদ্দিকি হত্যার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সলমনকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, এই সুযোগে বিশ্নোইয়ের নাম করে আদতে হুমকিবার্তা পাঠাচ্ছেন অন্য কেউ।