সেদিন তাঁরা ছিলেন পাশাপাশি, সাজাদ লোন ও সৈফুদ্দিন সোজ— ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার জানিয়েছিল, তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়নি। কিন্তু প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সৈফুদ্দিন সোজ বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়ির পাঁচিলের সামনে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা শুরু করতেই পুলিশ তাঁকে জোর করে ভিতরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সোজের প্রশ্ন, ‘‘বাড়ির বাইরে যেতে হলে যদি আমাকে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়, তা হলে আমাকে ‘মুক্ত’ বলা যায় কি?
তবে জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের নেতা সাজাদ গনি লোন আজ টুইটারে তাঁর মুক্তি পাওয়ার খবর জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘‘অবশেষে এক বছর পূর্ণ হওয়ার পাঁচ দিন আগে সরকার জানাল, আমি এখন মুক্ত!’’ জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতির গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আজ ফের তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর স্বরাষ্ট্র দফতরের এই নির্দেশিকার বলা হয়েছে, জন নিরাপত্তা আইনে তাঁর আটকের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
সোজ সংবাদমাধ্যমকে টেলিফোনে বলেছেন, ‘‘আমার মুক্তির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে মিথ্যে তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমি দু’বার বাড়ি থেকে বেরোতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ বাধা দিয়েছে। আমাকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট আমাকে আটক করা হয়েছিল। এখনও আমি আটক হয়ে রয়েছি। আশা করব এ বার আদালত উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।’’ সোজের দাবি, পুলিশকর্মীদের কাছে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, কোন নির্দেশের জেরে তাঁকে আটকানো হচ্ছে। কিন্তু পুলিশকর্মীরা কোনও লিখিত আদেশ দেখাতে পারেননি। তাঁরা বলেন, মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতেই প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন পিডিপি-বিজেপি জোট সরকারের মন্ত্রী সাজাদ আজ জানিয়েছেন, গত অগস্টে গ্রেফতারির পরে তাঁকে ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ পাঠানো হয়েছিল। এক পর গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। তাঁর টুইট , ‘‘জেলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার কাছে নতুন নয়। আগের ঘটনাগুলিতে হেনস্থা ও দৈহিক নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেশি ছিল। এ বার মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছি। আশা করি, সেই অভিজ্ঞতার কথা দ্রুত জানাতে পারব।’’
আরও পড়ুন: সোনার কেল্লার শহরে বিধায়কদের পাঠালেন গহলৌত
মেহবুবা মুফতির দলীয় টুইটার হ্যান্ডলে আজ লেখা হয়েছে, ‘‘সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানাচ্ছি, জন নিরাপত্তা আইনে ২০২০-র নভেম্বর পর্যন্ত মেহবুবার আটকের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তাঁকে বেআইনি ভাবে আটক রাখার বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনটি ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে! কী ভাবে এক জন ন্যায়বিচার পাবেন?’’ নরেন্দ্র মোদী সরকার গত ৫ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাজন ও বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের পরেই মেহবুবা-সহ উপত্যকার অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আটক করা হয়েছিল। তবে অন্য দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ফারুক ও ওমর আবদুল্লাকে সম্প্রতি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ওমর আজ সাজাদের মুক্তিতে খুশি প্রকাশ করেন টুইটারে।
আরও পড়ুন: পঞ্জাবের তিন জেলায় বিষমদে মৃত ২১, অনেকে হাসপাতালে