কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
তীব্র ধর্মীয় মেরুকরণ। বিজেপির অর্থের প্রবল দাপট। রাজনৈতিক ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ। আর সংবাদমাধ্যম ও নেট দুনিয়ায় আধিপত্যের মাধ্যমে সামাজিক প্রভাব তৈরি করা। এগুলিই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর দলের জয় এবং কংগ্রেসের হারের সম্ভাব্য কারণ বলে দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। একই সঙ্গে তাঁর তির্যক মন্তব্য, “(ইরাকের) সাদ্দাম হুসেন এবং (লিবিয়ার) মুয়াম্মর গদ্দাফির জমানায় নির্বাচন হত। তাঁরাও ভোটে জিততেন!”
মঙ্গলবার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশুতোষ বার্ষ্ণেয় এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাহুলের এই মন্তব্যে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, রাহুল দেশের গণতন্ত্রের অপমান করছেন। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেসের অন্দরেই তো দলের ২৩ জন নেতা শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাহুল আজ এই প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খুলে বলেন, “কংগ্রেসে জনা কুড়ি লোকের গোষ্ঠী রয়েছে, যাদের ভিন্ন মত। ওঁরা বিজেপি, বিএসপি বা তৃণমূলে থাকতে পারতেন? কংগ্রেস ছাড়া কোথাও এটা চলত না। এ দলের নিয়ম, মত পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু বিতর্ক থামে না।” উল্টো দিকে, বিজেপি-আরএসএসের নিজের অন্দরমহলে তাকানোর ক্ষমতা নেই বলে তাঁর অভিযোগ।
রাহুলের দাবি, “বিজেপি সাংসদরা আমাকে বলেন, ওঁদের খোলাখুলি আলোচনার উপায় নেই। ওঁরা কী বলবেন, তা বলে দেওয়া হয়।”
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ২০১৮ সালে কংগ্রেস ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে জিতেছিল। কিন্তু লোকসভায় খারাপ ফল করে। রাহুল বলেন, ছত্তীসগঢ়ের কংগ্রেস নেতৃত্ব ব্যাখ্যা দিতে পারেনি যে, কী ভাবে দল বিধানসভায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে লোকসভায় মাত্র দু’টি আসন জিতল। রাজস্থানে জোর লড়াইয়ের পরে শূন্য আসন! এটা আশ্চর্যজনক, অবিশ্বাস্য। তাঁর মতে, “তীব্র মেরুকরণের সঙ্গে আর্থিক ও সামাজিক আধিপত্য এর কারণ হতে পারে। বিজেপি অন্য দলের তুলনায় বিপুল খরচ করছে। প্রধানমন্ত্রী সপ্তাহে ৭ দিন, ২৪ ঘন্টা টিভিতে। আর কেউ নেই। এর পিছনে আর্থিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা এককাট্টা হয়েছে। রাহুলের মতে, একবিংশ শতাব্দীতে ফেসবুক,-হোয়াটসঅ্যাপে ‘কব্জা’, আর্থিক দাপট ও প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে নির্বাচনী গণতন্ত্রকেও গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়।