মোদী-স্তূতির অভিযোগে গহলৌতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে খড়্গেকে ‘বার্তা’ সচিনের। ফাইল চিত্র।
দলবিরোধী কাজের অভিযোগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের অনুগামী তিন বিধায়কের বিরুদ্ধে সে দিন এআইসিসি-কে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন তিনি। সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই পাঠানো হয়েছিল শোকজ নোটিস। ঘটনাচক্রে, সেই মল্লিকার্জুন খড়্গে এখন কংগ্রেসের সভাপতি। কিন্তু প্রায় দেড় মাস পরেও সেই শোকজ নোটিসের জবাব দেননি ওই তিন বিধায়ক।
সেই ঘটনা নিয়ে এ বার সরব হলেন ‘গহলৌত বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত রাজস্থানের কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। কংগ্রেস সূত্রের খবর, খড়্গেকে লেখা চিঠিতে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, সচিন চিঠিতে অভিযোগ করেছেন রাজস্থানের মানগঢ় গ্রামে সরকারি কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করেছেন গহলৌত। প্রকাশ্যেও একই দাবি তুলেছেন তিনি।
সেপ্টেম্বরে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের আগে গান্ধী পরিবারের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে গহলৌতের নাম উঠে এসেছিল। সে সময় গহলৌতের নাম না করে রাহুল গান্ধী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি হলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে গহলৌতকে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর গহলৌতের উত্তরসূরি মনোনীত করার জন্য মরুরাজ্যের রাজধানী জয়পুরে গিয়েছিলেন এআইসিসি নিযুক্ত দুই পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং অজয় মাকেন।
কিন্তু গহলৌতের উস্কানিতেই সে সময় তাঁর শিবিরের কংগ্রেস বিধায়কেরা খড়্গেদের সঙ্গে দেখা করেননি বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী তিন নেতা— রাজস্থানের নগরোন্নয়ন, আবাসন ও পরিষদীয় মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল, কংগ্রেস পরিষদীয় দলের চিফ হুইপ মহেশ জোশী এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠকের নেতৃত্বে ‘গণ ইস্তফার চিত্রনাট্য’ তৈরি করা হয় বলেও অভিযোগ। খড়্গেদের সুপারিশের ভিত্তিতেই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয় ওই তিন বিধায়ককে।
বস্তুত, ওই ঘটনার জেরেই দলের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েন গহলৌত। প্রকাশ্যে তাঁকে বলতে হয়, ‘‘বিধায়কদের আচরণের নেপথ্যে আমার কোনও ভূমিকা নেই।’’ ওই ঘটনার জেরে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হয়নি তাঁর। হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে সচিন তাঁর ওই চিঠি প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কংগ্রেস একটি পুরানো দল, যেখানে প্রত্যেকের জন্য একই নিয়ম, তা তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন। আমি নিশ্চিত, নতুন সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে পদক্ষেপ করবেন।’’
রবিবার মানগঢ়ের সরকারি সভায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গহলৌত বলেছিলেন, ‘‘বিদেশে গিয়ে মোদীজি যে এত সম্মান পান, তার কারণ হল তিনি মহাত্মা গান্ধীর দেশকে নেতৃত্ব দেন।’’ এ প্রসঙ্গে সচিনের মন্তব্য, ‘‘বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেওয়া ঠিক নয়। আমরা সকলেই জানি, প্রধানমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদের প্রশংসা করার পরে কী হয়েছিল।’’ প্রসঙ্গত, রাজ্যসভায় মোদীর সেই প্রশংসার পরেই কংগ্রেসের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন আজাদ। শেষ পর্যন্ত দল ছাড়েন তিনি।