সলমন খান। ফাইল চিত্র।
অভিনেতা সলমন খানকে খুন করতে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল ভাড়াটে খুনিকে। শুধু তা-ই নয়, একে ৪৭, একে ৯২ এবং এম ১৬ বন্দুক আনানো হয়েছিল পাকিস্তান থেকে। মহারাষ্ট্রের পানভেলে সলমনের খামারবাড়ির কাছেই তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল। বৃহস্পতিবার চার্জশিটে এমনই দাবি করল নভি মুম্বই পুলিশ।
চার্জশিটে পাঁচ জন ভাড়াটে খুনির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যারা লরেন্স বিশ্নোই গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, সলমনকে খুনের জন্য বাছা হয়েছিল ওই পাঁচ জনকে। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম। এই ভাড়াটে খুনিরা পুণে, রায়গড়, নভি মুম্বই, ঠাণে এবং গুজরাতে লুকিয়ে রয়েছে বলেও ওই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অগস্ট থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিলের মধ্যে সলমন তথা ‘ভাইজান’কে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাঁর গতিবিধির উপর ৬০-৭০ জনের একটি দল সব সময় নজরদারি চালাত। বিশেষ করে সলমনের বান্দ্রার বাসভবন, পানভেলের খামারবাড়ি এবং গোরেগাঁও ফিল্মসিটিতে। সলমনকে খুন করতে পাকিস্তান থেকে যে বন্দুক আনানো হয়, তার মধ্যে তুরস্কের তৈরি জিগানা বন্দুকও ছিল। ঘটনাচক্রে, এই বন্দুকই পঞ্জাবের গায়ক তথা কংগ্রেস নেতা সিধু মুসে ওয়ালাকে খুন করতে ব্যবহার করেছিল আততায়ীরা।
বৃহস্পতিবারই হরিয়ানার পানিপথ থেকে সুখা নামে এক দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়। পুলিশের দাবি, সলমনকে খুনের জন্য এই শার্পশুটার অজয় কাশ্যপ ওরফে একে এবং আরও চার জনকে দায়িত্ব দিয়েছিল সুখা। অজয়ের নেতৃত্বে ওই দল সলমনের বাসভবন, খামারবাড়ি, তাঁর প্রতি মুহূর্তের গতিবিধির রেকি করেছিল। সলমনের আঁটসাঁট নিরাপত্তা এবং বুলেটপ্রুফ গাড়ি থাকায় হামলার জন্য যে উন্নতমানের অস্ত্র দরকার ছিল, তা বুঝেই পাকিস্তান থেকে ওই বন্দুকগুলি আনানো হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানের এক অস্ত্র ব্যবসায়ী ডোগারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুখা। ভিডিয়ো কলে একে ৪৭ এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র দেখে। তার পর চুক্তি চূড়ান্ত হয়। ৫০ শতাংশ অগ্রিম দেয় সুখা। তার পর বাকি টাকা বন্দুক হাতে পাওয়ার পর মেটানো হয়। চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, সলমনকে খুনের পর কন্যাকুমারীতে জড়ো হওয়ার কথা ছিল আততায়ীদের। সেখান থেকে শ্রীলঙ্কায় পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সলমনের বান্দ্রার বাসভবনের বাইরে গুলি চলার ঘটনার তদন্ত করছিল পুলিশ। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে তাদের হাতে।
গত ১২ অক্টোবর পুত্র জিশান সিদ্দিকির কার্যালয়ের সামনে খুন হন এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকি। ঘটনাচক্রে, বাবা সিদ্দিকির সঙ্গে সলমনের সুসম্পর্কও ছিল। সিদ্দিকি খুনের পর থেকেই সলমনের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়। ঘটনাচক্রে, সলমনের বান্দ্রার বাড়ির সামনে গুলি চালানোর ঘটনায় যাঁদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ, তাঁদের মধ্যে এক জন আবার বাবা সিদ্দিকি খুনে অভিযুক্ত। সলমনের বাড়ির সামনে গুলি চালানোর ঘটনায় প্রমাণের অভাবে শুভম লোনকর নামে ওই ব্যক্তিকে ছেড়েও দিয়েছিল পুলিশ। সিদ্দিকি খুনে তাঁর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও তাঁর কোনও হদিস পায়নি পুলিশ।