আদানিদের পাশে আরএসএস। — ফাইল ছবি।
আমেরিকার শর্ট সেলার হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর ভিত নড়ে গিয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট আদানি গোষ্ঠীর। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়ছে গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম। বিনিয়োগ নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন কোটি কোটি বিনিয়োগকারী। এলআইসি, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতো জনসাধারণের অর্থ বিনিয়োগ বা গচ্ছিত রাখার প্রতিষ্ঠানেরও ঋণ বা বিনিয়োগ রয়েছে আদানি গোষ্ঠীতে। সেই দুই সংস্থায় অর্থ আছে যাঁদের, তাঁদেরও দুশ্চিন্তা কম নয়। এই অবস্থায় আদানিদের হয়ে ব্যাট ধরল আরএসএস। তাদের মুখপত্রে দাবি করা হয়েছে, ভারতের বামপন্থীরা আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ‘নেগেটিভ’ প্রচার চালাচ্ছে।
আরএসএসের মুখপত্রে লেখা হয়েছে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতীয়দের একটি লবি আদানিদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক গল্প বানিয়ে তা প্রচার শুরু করেছে। এই লবিতে বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কিছু মানুষের পাশাপাশি রয়েছে এক বড় বামপন্থী নেতার সাংবাদিক স্ত্রীও। আরএসএসের মতে, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট থেকেই এই হামলা শুরু হয়েছে ভাবলে ভুল হবে। প্রতিবেদনে আরএসএসের দাবি, ২০১৬-১৭ সাল থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আরএসএসের দাবি, তা শুরু হয়েছে ভারত নয়, বরং অস্ট্রেলিয়া থেকে। লেখা হয়েছে, ‘‘শুধুমাত্র গৌতম আদানিকে বদনাম করতে অস্ট্রেলিয়ার একটি এনজিও একটি ওয়েবসাইট পর্যন্ত খুলে বসেছে।’’ অস্ট্রেলিয়ার এনজিও বব ব্রাউন ফাউন্ডেশনকে কাঠগড়ার তুলে আরএসএসের দাবি, আদানি গোষ্ঠীর যে কোনও প্রকল্প নিয়ে এই এনজিও আপত্তি তোলে। সেখানেই এক জায়গায় লেখা হয়েছে, যদিও তৃণমূল বা কংগ্রেসশাসিত রাজ্যে আদানি গোষ্ঠীর প্রকল্প নিয়ে চুপ অস্ট্রেলিয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন!
মুখপত্রে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘‘এই হামলা অনেকটা ভারত বিরোধী জর্জ সোরোসের ‘ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড’ এবং ‘ব্যাঙ্ক অফ তাইল্যান্ড’-এর উপর হামলা এবং ব্যাঙ্ক দু’টিকে পথে বসানোর মতো।’’
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ক্রমশ তলানিতে পৌঁছে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘনিষ্ঠ আদানি গোষ্ঠী। এ নিয়েই শোরগোল সংসদে। জেপিসির দাবি তুলছেন বিরোধীরা। প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি মোদী। মোদী সরকারও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্যে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে একজন শিল্পপতির হয়ে বামপন্থীদের দুষে আসরে নেমে পড়ল আরএসএস। একে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।