Retrospective Tax Law

Retrospective Tax: পুরনো লেনদেনে ‘প্রণবের কর’ বাতিল করল কেন্দ্র, সমর্থন কংগ্রেসের, অখুশি সঙ্ঘ

মোদী সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রয়াত প্রণবের সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়িয়েছে আরএসএসের অর্থনৈতিক ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২১ ০৬:১৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অবসরের পরে নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে গিয়েছিলেন তিনি। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সেই সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব খুশি হয়নি। প্রয়াণের পরে আজ সেই আরএসএস-ই প্রণবের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাল। কংগ্রেস নয়।

Advertisement

অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুরনো ব্যবসায়িক লেনদেনে কর বসানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে গত কালই মোদী সরকার লোকসভায় বিল পেশ করেছিল। আজ লোকসভায় হট্টগোলের মধ্যে কোনও আলোচনা ছাড়াই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সেই কর আইনে সংশোধন বিল পাশ করিয়ে নিয়েছেন। মনমোহন সরকারের সিদ্ধান্ত মোদী সরকার প্রত্যাহার করলেও কংগ্রেস তার কোনও বিরোধিতা করেনি। উল্টে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী, কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেছেন, তিনি এই সিদ্ধান্তে খুশি। উল্টো দিকে মোদী সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে প্রয়াত প্রণবের সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়িয়েছে আরএসএসের অর্থনৈতিক ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। আরএসএস নেতাদের মতে, প্রণবের ওই সিদ্ধান্ত ছিল দেশহিতে তাঁর সব থেকে বড় পদক্ষেপ ছিল।

২০০৭-এর ভোডাফোন-হাচিসনের ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে কর আদায় করতে প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১২-র বাজেটে পুরনো লেনদেনে কর বসানো বা ‘রেট্রসপেক্টিভ ট্যাক্স’-এর ঘোষণা করেছিলেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, সনিয়া গাঁধী, পি চিদম্বরম এর বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁদের মত ছিল, এতে বিদেশি লগ্নি ধাক্কা খাবে। আজ চিদম্বরম বলেন, ‘‘ভোডাফোনে রেট্রসপেক্টিভ ট্যাক্স প্রত্যাহার করায় আমি খুশি, কারণ গত আট বছরে আমরা যে সমস্যার ভুগছিলাম, তাতে এ বার ইতি পড়ল।’’ কিন্তু আজ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বলেন, ‘‘এটি প্রণবদা’র দেশহিতে সবথেকে বড় পদক্ষেপ ছিল। সমস্যা হল, সে সময় তাঁর দলের লোকেরাই এর বিরুদ্ধে ছিলেন। সংবাদমাধ্যম এমন আবহ তৈরি করেছিল, যেন তিনি একটা অপরাধ করে ফেলেছেন। যারা করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে বসে কর চুরি করে, তিনি যদি সেই চোরেদের থেকে কর আদায়ের চেষ্টা করেন, তাতে ভুল কোথায়?”

Advertisement

২০১৪-য় সরকার বদলের পরে মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী হয়ে অরুণ জেটলি ঘোষণা করেছিলেন, তাঁরা রেট্রসপেক্টিভ ট্যাক্সের পক্ষে নন। তবে জেটলি কর আইনে বদল করেননি। আবার আইন বহাল রেখেও ভোডাফোন, কেয়ার্ন এনার্জির থেকে কর আদায় করা যায়নি। এ বার ভোডাফোন, কেয়ার্ন এনার্জির সঙ্গে কর আদায় নিয়ে মামলায় হেরে গিয়ে মোদী সরকার রণে ভঙ্গ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বদেশি জাগরণের নেতা অশ্বিনীর বক্তব্য, ‘‘এটা সত্যি যে আন্তর্জাতিক সালিশির চাপে সরকারের সামনে আর কোনও উপায় ছিল না। কিন্তু আসল কথা হল, এতে চোরেদের হাজার হাজার কোটি টাকার সুরাহা দেওয়া হল। সরকার ও মানুষের লোকসান হল। বিদেশি লগ্নির সমস্যার এটা একটা বড় উদাহরণ।’’

আজ বিল পাশের সময় সীতারামন বলেন, জেটলি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। মোদী সরকার রেট্রসপেক্টিভ ট্যাক্সে বিশ্বাসী নয়। কিন্তু আদালতে মামলা চলছিল বলে তখনই আইনে সংশোধন করা যায়নি। গত বছরের শেষে দু’টি মামলার মীমাংসা হয়ে গিয়েছে। ভারত সরকার সেই মামলায় জিততে পারেনি। এখন জেটলি তথা মোদী সরকারের প্রতিশ্রুতি রাখতে আইনে সংশোধন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে পুরনো ব্যবসায়িক লেনদেনে কর বসানো হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement