যোগী আদিত্যনাথ। —ফাইল চিত্র।
দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ, ঠিক প্রার্থীকে টিকিট না দেওয়ার মতো বিষয়গুলির পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ‘যথেষ্ট’ সহায়তার অভাবকে উত্তরপ্রদেশে নিজেদের খারাপ ফলের জন্য দায়ী করেছে বিজেপি। সূত্রের মতে, সেই রিপোর্টের কারণেই সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ডজন খানেক জেলাশাসককে বদলি করেছে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, যে জেলাগুলিতে জেলাশাসক পরিবর্তন হয়েছে, সেই জেলাগুলিতেই লোকসভা ভোটে হেরেছেন বিজেপি প্রার্থীরা।
লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৩২টি আসন কম পেয়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে ২০১৯ সালে বিজেপি পেয়েছিল ৬২টি আসন। এ বার বিজেপি নেমে আসে ৩৩টি আসনে। যার অর্থ উত্তরপ্রদেশে বিজেপি আসন ধরে রাখতে পারলে কেন্দ্রে সেই অর্থে শরিক-নির্ভরতা থাকত না তাদের। উত্তরপ্রদেশের খারাপ ফলের কারণ খতিয়ে দেখতে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিল বিজেপি। সম্প্রতি তাদের রিপোর্ট জমা পড়ে যোগীর কাছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যে গত ৭ বছর ধরে বিজেপির শাসন থাকলেও, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে যে ধরনের সাহায্য আশা করা গিয়েছিল, বহু ক্ষেত্রেই তা পাওয়া যায়নি। সূত্রের দাবি, ওই রিপোর্টের পরেই কৌশাম্বি, চিত্রকোট, শ্রাবস্তী, সীতাপুর, বস্তি, সাহরনপুর, বান্দা, মোরাদাবাদ, সীতাপুর, শম্ভল, কাইসারগঞ্জ, অউরাইয়ার জেলাশাসককে সরিয়ে দেওয়া হয়।
দলের প্রচার কৌশলকেও দায়ী করা হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ৪০০ আসন পেলে বিজেপি সংবিধান পরিবর্তন করবে— বিরোধীদের ওই প্রচার বরং জনমানসে সাড়া ফেলেছিল। সংবিধান পরিবর্তন হলে সংরক্ষণ থাকবে না— ওই প্রচারের জেরে দলিত সমাজ বিকল্প হিসেবে এসপি-কে বেছে নিয়েছে। এ ছাড়া, রিপোর্ট বলছে, রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের রিপোর্ট অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পছন্দ করা প্রার্থী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয় নেতৃত্বের আস্থা পাননি। যে কারণে বসে যান স্থানীয় কর্মীরাও।
উত্তরপ্রদেশে হারের পিছনে রাজপুত-ক্ষত্রিয় সমাজের ক্ষোভ বড় কারণ বলেও জানানো হয়েছে রিপোর্টে। যার জন্য দায়ী করা হয়েছে রাজকোটের বিজেপি সাংসদ পুরুষোত্তম রূপালার রাজপুত সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্যকে। পূর্বাঞ্চলে ২০১৯ সালে যেখানে ২৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০টিতে জিতেছিল বিজেপি, এ বার তা নেমে আসে ১১-য়।