পুদুচেরির রাজ্যপাল কিরণ বেদি বনাম মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণস্বামী সঙ্ঘাত তুঙ্গে। —ফাইল চিত্র
ভৌগোলিক দূরত্ব এক হাজার ৮০০ কিলোমিটারেরও বেশি। কিন্তু রাজভবন বনাম সরকারের সঙ্ঘাতের ছবিটা এক। বরং কলকাতার চেয়েও তা তীব্র পুদুচেরিতে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর কিরণ বেদিকে অপসারণের দাবিতে তিন দিন ধরে ধর্নায় বসে আছেন মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। রাজভবন থেকে কিলোমিটার খানেক দূরে। সঙ্গে রয়েছেন কংগ্রেস-সহ জোট শরিক দলের নেতা-মন্ত্রীরাও।
২০১৬ সালের মে মাসে কিরণ পুদুচেরির লেফটেন্যান্ট গভর্নর হওয়ার পর থেকেই কার্যত সঙ্ঘাতের আবহ কংগ্রেসের নেতৃত্বে সেকুলার ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে। দীর্ঘ দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণস্বামী গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ করে আসছেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে অন্যতম, কেন্দ্রের কথামতো রাজ্যের উন্নয়নে বাধা দিচ্ছেন কিরণ, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানছেন না এবং সর্বোপরি, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে কাজই করছেন না।
আগামী মে মাসে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরির বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে রাজভবনের সঙ্গে নারায়ণস্বামীর সঙ্ঘাত চরমে উঠেছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, শুক্রবার থেকে রাজভবনের অদূরে আন্না সালাই-এ অবস্থান ধর্নায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে রয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা, বেশ কয়েক জন বিধায়ক, পুদুচেরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মতো নেতা-নেত্রীরাও। তিন দিন ধরে রাস্তার পাশে অস্থায়ী আস্তানাতেই ঘুমোচ্ছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: এ বার হু-এর কোভিড মানচিত্রে ভারত থেকে আলাদা জম্মু-কাশ্মীর, বিতর্ক
নারায়ণস্বামী চেয়েছিলেন, রাজভবনের গেটের বাইরেই ধর্নায় বসবেন। তবে করোনা এবং নিরাপত্তার কারণে সেই অনুমতি মেলেনি। কিন্তু দূরে হলেও নারায়ণস্বামীর কর্মসূচির জেরে রাজভবনের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েক গুণ। মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী।
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই প্রেসিডেন্ট
বছর দেড়েক আগেও ধর্নায় বসেছিলেন নারায়ণস্বামী। ধর্নাস্থলে বসেই তিনি বলেন, ‘‘এটা তো নতুন কিছু নয়। ২০১৯ সালেও কিরণ বেদিকে সরানোর দাবিতে আমরা রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসেছিলাম। কিন্তু এখন সঙ্ঘাত চরমে উঠেছে। এখন তো মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রায় সব ফাইল ফেরত পাঠাচ্ছেন। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত মানছেন না। এটা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাজ নয়। ওঁর কোনও স্বাধীন ক্ষমতা নেই।’’
সম্প্রতি পোঙ্গলের জন্য পুদুচেরির বাসিন্দাদের জন্য ১০০০ টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করেছিলেন নারায়ণস্বামী। কিন্তু কিরণ মাত্র ২০০ টাকা অনুদান মঞ্জুর করেছেন। পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা নেই, উনি নিজেই তো সংবিধান।’’