প্রতীকী ছবি।
দিওয়ালি উপলক্ষে রাজধানী দিল্লির সন্ত নগরে বিরিয়ানির দোকান দিয়েছিলেন এক মুসলিম ব্যক্তি। কিন্তু তখনও জানতেন না, উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের চোখে সেটা কত বড় ‘অপরাধ’! এবং সে কারণে তাঁকে ব্যবসা বন্ধ করে ফিরে যেতে হবে। খাস রাজধানীর এই ঘটনার ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল শুরু হয়ে যায়। চাপের মুখে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করলও গোটা ঘটনার মূল পান্ডা তথা বজরঙ্গ দলের সদস্য নরেশ কুমার সূর্যবংশী এখনও অধরা।
ঘটনাটি সন্ত নগরের। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়ো অনুযারী, বৃস্পতিবার রাত ন’টা নাগাদ সন্ত নগরে এক মুসলিম বিরিয়ানি বিক্রেতার দোকানে হানা দেয় নরেশ কুমার সূর্যবংশী। ওই মুসলিম দোকানদার এবং দোকানের কর্মচারিদের শাসাতে থাকে সে। নিজেকে বজরঙ্গ দলের সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে নরেশ সাফ জানিয়ে দেন, হিন্দুপ্রধান সন্ত নগরে তারা কোনও ভাবে কোনও উৎসবে ব্যবসা করতে পারবে না। তার এই হুমকির পরেই দোকান বন্ধ করে কর্মচারিদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান ওই বিরিয়ানি বিক্রেতা।
এই ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নিন্দা করার পাশাপাশি সমালোচনায় ঝড় বয়ে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের হাতে থাকা দিল্লি পুলিশকে নিয়ে। অনেকেই জানান, অমিত শাহের পুলিশ হিন্দুত্ববাদীদের অপরাধ দেখেও চোখ বুজে থাকে। এ প্রসঙ্গে গত বছরের গোড়ার দিকে এনআরসি-সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের পিস্তল নিয়ে হুমকি দেওয়া হিন্দুত্ববাদী নেতাকে পরে জামিন দেওয়ার ঘটনা, দিল্লি দাঙ্গার আগে বিজেপির এক নেতার উস্কানিমূলক মন্তব্য বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ‘গোলি মারো শালোকো’ স্লোগান নিয়ে দিল্লি পুলিশের
নীরবতার প্রসঙ্গ তোলেন অনেকে। পাশাপাশি অনেকে ভারতের সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ তুলে কড়া শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন নেটমাধ্যমে। প্রবল চাপের মুখে অবশেষে নড়ে বসে পুলিশ। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নরেশ সূর্যবংশীর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে তারা। যদিও নরেশ অধরাই। এ নিয়ে নেটমাধ্যমে কটাক্ষ করে অনেকেই গত বছর জানুয়ারিতে জেএনইউ-এ হামলায় অভিযুক্ত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্য কোমল শর্মার এখনও গ্রেফতার না হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে দিল্লি পুলিশকে নিশানা করেছেন।