সাংসদ-কন্যা মাধুরী। ছবি: সংগৃহীত।
পুণের পোর্শেকাণ্ডের ছায়া এ বার চেন্নাইয়ে। ফুটপাথে ঘুমন্ত এক যুবককে গাড়ি দিয়ে পিষে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সাংসদ-কন্যার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলার বাবা রাজ্যসভার সাংসদ। সাংসদ-কন্যাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই জামিনে মুক্তিও পেয়ে যান তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাতে ওয়াইএসআর কংগ্রেস দলের রাজ্যসভার সাংসদ বেদ মস্তান রাওয়ের মেয়ে মাধুরী তাঁর এক বান্ধবীর সঙ্গে বিএমডব্লিউ গাড়িতে চেপে ফিরছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন মাধুরীই। বসন্তনগর এলাকায় ফুটপাথের উপর গাড়ি তুলে দেন তিনি। সেখানে ঘুমোচ্ছিলেন এক যুবক। ফলে বিএমডব্লিউ-র চাকার তলায় চাপা পড়েন তিনি। দুর্ঘটনার পরই গাড়ি নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালান তিনি। তবে তাঁর বান্ধবী গাড়ি থেকে নেমে স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন বলে অভিযোগ। তার পর তিনি ক্যাব ডেকে চলে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় সূর্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়েরা। তবে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবক পেশায় ছিলেন এক জন চিত্রশিল্পী। মাত্র আট মাস আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় জড়ো হন মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয়েরা। বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। জানা যায়, যে গাড়িটি সূর্যকে চাপা দিয়েছে সেটি সাংসদ বেদ রাওয়ের সংস্থার গাড়ি। সেই সূত্র ধরে সাসংদ-কন্যা মাধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে গ্রেফতার হওয়ার পর পরই থানা থেকেই জামিন পেয়ে যান তিনি।
২০২২ সালে বেদকে রাজ্যসভায় পাঠায় জগন্মোহন রেড্ডির দল। তবে তাঁর আগে তিনি বিধায়কও ছিলেন। রাজনীতির সঙ্গে তাঁর বহু পুরনো সম্পর্ক। এ ছাড়াও সামুদ্রিক খাবারের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বেদ। তাঁর সংস্থা বিএমআর খুবই জনপ্রিয়। মাধুরীর জামিন পাওয়ার ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। প্রশ্ন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই কি মেয়েকে জামিনে মুক্ত করিয়েছেন বেদ?
গত ১৯ মে পুণেতে একটি পোর্শের ধাক্কায় দুই তরুণ ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যু হয়। গাড়িটি চালাচ্ছিল ১৭ বছরের কিশোর। সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ সেই অভিযুক্ত কিশোরের বাবা, মা এবং ঠাকুরদাকে গ্রেফতার করেছে। নাবালক হওয়ায় অভিযুক্তকে ‘অবজ়ার্ভেশন হোম’-এ রাখা হয়েছে। পোর্শেকাণ্ডের পরেও প্রভাবশালী তত্ত্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। অভিযোগ উঠেছিল, প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্তের রক্তের নমুনা হাসপাতালে বদলে ফেলা হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই চেন্নাইয়ে ঘটল একই ধরনের ঘটনা।