সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির জন্য নির্দিষ্ট আসন থেকে টাকার বান্ডিল উদ্ধার হয়েছে! শুক্রবার রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই উপস্থিত সদস্যদের এই কথা জানান রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, তাঁর আসন থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটলেও সিঙ্ঘভি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি যখন রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন, তখন তাঁর কাছে মাত্র ৫০০ টাকা ছিল।
উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনখড়় জানান, বৃহস্পতিবার রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর নিয়মমাফিক তল্লাশি চলানো হয়। সেই তল্লাশির সময়েই ২২২ নম্বর আসন থেকে টাকার বান্ডিল উদ্ধার হয়। ধনখড় বলেন, “আমি সদস্যদের জানাতে চাই যে, গত কাল সভা মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পর অন্তর্ঘাত-বিরোধী তল্লাশি অভিযানে ২২২ নম্বর আসন থেকে টাকার বান্ডিল উদ্ধার হয়েছে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, বিষয়টি আমার গোচরে আনা হয়েছে। আমি নিশ্চিত করছি যে, এর তদন্ত হবে এবং সেই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।” প্রসঙ্গত, তেলঙ্গানা থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত সিঙ্ঘভির জন্য ২২২ নম্বর আসনটিই নির্দিষ্ট করা রয়েছে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় সিঙ্ঘভির নাম জড়িয়ে গিয়েছে। সিঙ্ঘভির দল কংগ্রেসও এই ঘটনায় ‘স্বচ্ছতার স্বার্থে’ তদন্ত দাবি করেছে। শুক্রবার রাজ্যসভায় এই নিয়ে হইচই শুরু হয়। বিরোধী বেঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলা হয় যে, কেন সংশ্লিষ্ট সাংসদের নাম নিলেন ধনখড়। পাল্টা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “চেয়ারম্যান আসনের নম্বর এবং রাজ্যসভার মাননীয় সদস্যের নাম করেছেন। এতে সমস্যা কোথায়?”
তাঁর জন্য নির্দিষ্ট আসন থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সিঙ্ঘভি বলেন, “এমন প্রথম শুনলাম। কখনও এমন কিছু শুনিনি।” তার পরেই বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তাঁর গতিবিধির বিবরণ দিয়ে এই আইনজীবী-রাজনীতিক বলেন, “যখন আমি রাজ্যসভায় যাই (বৃহস্পতিবার) তখন আমার কাছে একটি ৫০০ টাকার নোট ছিল। আমি দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে রাজ্যসভায় ঢুকি। ১টায় অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। দেড়টা পর্যন্ত আমি অযোধ্যা প্রসাদের সঙ্গে ক্যান্টিনে বসেছিলাম। তার পর সংসদ থেকে বেরিয়ে যাই।”
‘বিস্মিত’ সিঙ্ঘভি এ-ও জানান যে, যে হেতু সাংসদেরা তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট আসনে তালা দিয়ে চাবি বাড়ি নিয়ে আসতে পারেন না, তাই কেউ কোনও আসনের কাছে কী ভাবে গেল কিংবা কী ভাবে কিছু রেখে আসতে পারল, তা খতিয়ে দেখা উচিত। এই বিষয়ে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন সিঙ্ঘভি।
ধনখড় জানান, টাকার বান্ডিলে ৫০০-র নোট ছিল। নোটের সংখ্যাটি ১০০ হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে টাকাগুলি আসল কি না, তা স্পষ্ট নয় বলে জানান ধনখড়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান আরও জানান, এখনও পর্যন্ত টাকাগুলির দাবিদার পাওয়া যায়নি।