Rajasthan Crisis

মরুরাজ্যের প্রেমপত্রে তিন প্রশ্নের কাঁটা!

মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত রাজ্যপালের এই চিঠিকে ‘ছয় পৃষ্ঠার প্রেমপত্র’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৪:০৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

ছয় পৃষ্ঠার ‘প্রেমপত্রে’ তিন প্রশ্নের কাঁটা!

Advertisement

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখেছেন। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও রবিবার এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজস্থান সরকার বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে চাইলেও রাজ্যপাল তাতে বাধা দিচ্ছেন।

আজ রাজস্থানের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র বিধানসভার অধিবেশন ডাকা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতকে চিঠি পাঠিয়ে তিনটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন। এক, মুখ্যমন্ত্রী কি সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বিধানসভার অধিবেশন চাইছেন? দুই, অধিবেশনে হাজির হওয়ার জন্য কি বিধায়কদের ২১ দিনের সময় দেওয়া যেতে পারে? তিন, কোভিডের জন্য বিধানসভার মধ্যে কী ভাবে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা হবে?

Advertisement

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণে ফের রেকর্ড, বাড়ছে সুস্থতাও

আরও পড়ুন: রাজ্যে কোভিড নমুনা পরীক্ষার সংজ্ঞা-সংখ্যায় বদল আনবে ‘কোবাস ৮৮০০’

মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত রাজ্যপালের এই চিঠিকে ‘ছয় পৃষ্ঠার প্রেমপত্র’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর ও কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, রাজ্যের মন্ত্রিসভার কথা অগ্রাহ্য করে বিধানসভার অধিবেশন না-ডেকে রাজ্যপাল নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি কোনও ভাবেই মন্ত্রিসভার কথা অগ্রাহ্য করতে পারেন না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই কারণেই তিনি রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। আজ ইউপিএ সরকারের তিন আইনমন্ত্রী কপিল সিব্বল, সলমন খুরশিদ ও অশ্বিনী কুমার রাজ্যপালকে চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন সংবিধানের মধ্যে থেকেই কাজ করেন। কংগ্রেস আজ দেশের রাজভবনগুলির সামনে এ নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছে।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গেও অভিযোগ উঠেছিল, মোদী সরকার রাজ্যপালকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম আজ বলেন, “২০১৪ থেকে বিজেপির নিযুক্ত রাজ্যপালেরা বারবার সংবিধান ভেঙে চলেছেন। ২০১৬-য় অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড, ২০১৯-এ কর্নাটক— রাজ্যপালদের সংবিধান লঙ্ঘন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তিনটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। তার পরেও রাজস্থানের রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে মন্ত্রিসভার অনুরোধ অগ্রাহ্য করছেন। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালের নিজের কোনও ক্ষমতা নেই।”

এর পিছনে প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। চিদম্বরমের যুক্তি, কেন্দ্রের উদ্দেশ্য হল একটাই— বিরোধী দল শাসিত সরকার ফেলা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে সকলেই জানে। তিনি হয়তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যপালকে অধিবেশন না-ডাকার নির্দেশ দিচ্ছেন না। কিন্তু দলের নেতা হিসেবে কী করছেন, তা বলা মুশকিল।” কংগ্রেস মনে করছে, বিজেপি আসলে সচিন পাইলটকে সময় পাইয়ে দিতে চাইছে। যাতে তিনি কংগ্রেসের আরও বিধায়ক ভাঙিয়ে আনতে পারেন। তাই গহলৌত শিবির চাইছে, তাড়াতাড়ি অধিবেশন ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে। তার জন্য আজ সুপ্রিম কোর্টে রাজস্থানের স্পিকারের মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পাইলট শিবিরের ধারণা, সময় পেলে গহলৌত শিবির থেকে ১০-১৫ জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনা যাবে।

বিএসপি নেত্রী মায়াবতী আবার তাঁর দলের টিকিটে নির্বাচিত ছয় বিধায়ককে হুইপ জারি করেছেন, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। ওই ছয় বিধায়ক আগেই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এখন বিজেপির বিধায়ক এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন। যদিও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মায়াবতীর দাবি, বিএসপি জাতীয় দল। রাজস্থানের বিধায়কেরা তাই কংগ্রেসে মিশে যেতে পারেন না। কংগ্রেসের যুক্তি, মায়াবতী যে পুরোপুরিই বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছেন, এই ঘটনায় তা ফের প্রমাণিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement