গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে নকল করার ভিডিয়ো তাঁর ফোনে আছে। তিনি সেটা কাউকে পাঠাননি। কল্যাণকাণ্ডে দিনভর শোরগোলের মধ্যে মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, বেকারত্ব থেকে আদানি ইস্যু নিয়ে কোনও আলোচনা হচ্ছে না। অযাচিত ভাবে তৃণমূল সাংসদের মিমিক্রির ভিডিয়ো নিয়ে যত কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
বিতর্কের শুরু মঙ্গলবার থেকে। গত ১৩ ডিসেম্বর লোকসভায় হানা নিয়ে আলোচনার দাবি করেছিল বিরোধীরা। কিন্তু হয়নি। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করে সংসদে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থানে বসেছিলেন বিরোধী সাংসদেরা। সেখানে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণকে দেখা যায় উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের বাচনভঙ্গি নকল করতে। এ নিয়ে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছিলেন অন্য বিরোধী সাংসদেরা। ওই সময় সাদা টি-শার্ট, অফ হোয়াইট ট্রাউজার্স পরিহিত রাহুলকে দেখা যায় কল্যাণের ওই নকলনবিশি মোবাইলে রেকর্ড করছেন। এ নিয়ে বুধবার জোর আলোচনা চলছে। ধনখড় নিজে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ। তিনি রাহুলের আচরণ নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের নীরবতার কারণ জানতে চান রাজ্যসভায়। বস্তুত, ধনখড় যত না কল্যাণকে নিয়ে বলেছেন, তার চেয়ে বেশি অনুযোগ করেছেন রাহুলকে নিয়ে।
এ দিকে বিতর্কের মাঝে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাহুল নিজে। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদেরা বসেছিলেন। আমি ভিডিয়ো করছিলাম। ভিডিয়ো আমার ফোনে আছে। এখন সংবাদমাধ্যম এ সব দেখাচ্ছে।’’ রাহুল আরও বলেন, ‘‘এ নিয়ে কেউ তো কিছু বলেনি। ১৪৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ নিয়ে তো সংবাদমাধ্যম আলোচনা করছে না! আদানি নিয়ে আলোচনা নেই, রাফাল নিয়ে কথা নেই। বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্ন নেই। আমাদের সাংসদরা ব্যথিত। তাঁরা বাইরে বসেছিলেন। আর এখন আপনারা পড়েছেন মিমিক্রি নিয়ে।’’
অন্য দিকে, রাজ্যসভায় আবারও তাঁকে নকল করার প্রসঙ্গ তুলে ধনখড় বলেন, ব্যক্তিমানুষ হিসাবে তাঁকে নকল করলে যায় আসত না। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতির মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে, এমন কোনও কিছুই তিনি সহ্য করবেন না। এর পর কংগ্রেস সাংসদ দিগ্বিজয় সিংহকে সোজাসুজি তাঁদের ‘নীরবতার কারণ’ জানতে চান ধনখড়। সেখানেও তৃণমূল বা তৃণমূল সাংসদের চেয়েও রাহুলের ভিডিয়ো করার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। দিগ্বিজয়কে ধনখড় বলেন, ‘‘আপনারা বলেন যে আপনাদের দল নাকি ১৩৮ বছর পুরনো। কিন্তু আপনাদের এই নীরবতা আমার কানে বাজছে।’’ কিছুটা মেজাজ হারিয়ে ধনখড় আরও বলেন, ‘‘এক জন ভিডিয়ো করতে করতে মজা করছেন, উৎসাহ যোগাচ্ছেন। এটা কোন ধরনের ভদ্রতা?’’