বিদেশে রাহুল গাঁধী। ফাইল ছবি।
কথা ছিল, ৩ জানুয়ারি মোগায় ‘মেগা’ জনসভার মধ্যে দিয়ে পঞ্জাবের ভোট প্রচারের শিঙা ফুঁকবে কংগ্রেস। সেই উপলক্ষে সাজো সাজো রব পড়ে গিয়েছিল চন্নী-সিধুর প্রদেশে। কিন্তু যাঁকে ঘিরে প্রচারের জোর কলরব, সেই রাহুল গাঁধী মোক্ষম সময় পাড়ি দিলেন বিদেশ। উপায়ান্তর না দেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিতে হল জনসভার পরিকল্পনা। ঘটনায় অবাক পঞ্জাব কংগ্রেসের নেতারা।
রাহুল গাঁধীকে ‘পার্টটাইম রাজনীতিবিদ’ বলে হামেশাই কটাক্ষ করে বিজেপি। এমনকি নিজের শেষ মুম্বই সফরে নাম না করে রাহুলের ঘনঘন বিদেশ যাওয়ার অভ্যাসকে কটাক্ষ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সবাইকেই কার্যত ‘ঠিক’ প্রমাণ করে বর্ষশেষে রাহুল পাড়ি দিলেন বিদেশ। অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল ৩ জানুয়ারিতে পঞ্জাবের মোগার জনসভা।
বিধানসভা ভোট আসছে পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে। ভোটমুখী রাজ্যগুলির মধ্যে পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকার। তার উপর সদ্য অমরেন্দ্র সিংহকে সরিয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন চরণজিৎ সিংহ চন্নী। পদ হারিয়ে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-র হাত ধরেছেন অমরেন্দ্র। পাশাপাশি আম আদমি পার্টিও ল়ড়াইয়ে আছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ কংগ্রেস পঞ্জাবে সাম্প্রতিককালে কঠিনতম চ্যালেঞ্জের মুখে। পাশাপাশি অস্বীকার করার উপায় নেই, একমাত্র পঞ্জাবেই সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা কংগ্রেসের।
এই পরিস্থিতিতে প্রত্যাশিত ভাবেই রাহুল গাঁধীকে কেন্দ্র করে দান সাজাচ্ছিল কংগ্রেস। ঠিক হয়েছিল, নতুন বছরে মোগার জনসভা থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হবে হাতের প্রচার। মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাহুলই বেঁধে দেবেন প্রচারের সুর। কিন্তু সেই সুযোগ হাতছাড়া। রাহুল যে বিদেশে!
ঘটনায় ক্ষুব্ধ পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা। কিন্তু অভিযোগ, হেলদোল নেই দিল্লির আকবর রোডে, কংগ্রেসের সদর দফতরে। মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরযেওয়ালা জানিয়েছেন, ‘‘ছোট্ট ব্যক্তিগত সফরে রাহুল গাঁধী বিদেশ গিয়েছেন। এ নিয়ে বিজেপি যেন কোনও গুজব না রটায়।’’ জানা যাচ্ছে, বুধবারই বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন রাহুল। প্রতিবারের মতোই এ বারও জানা যায়নি বর্ষশেষে ঠিক কোথায় গিয়েছেন রাজীব-তনয়। তবে গুঞ্জন ইউরোপের কোনও দেশ, সম্ভবত ইতালিতে গিয়ে থাকতে পারেন রাহুল। জানা গিয়েছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি রাহুল পঞ্জাব ও গোয়ায় জনসভা করতে পারেন।
নভেম্বরে বিদেশের অজানা কোনও জায়গায় সপ্তাহ তিনেক কাটিয়ে আসার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রাহুলের আবার বিদেশযাত্রা স্বভাবতই খুশি করতে পারেনি কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাদের। বিশেষত, যখন শিয়রে পঞ্জাব-সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা ভোট। মোগার জনসভায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে একতার বার্তা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু নেতা যে বিদেশে!