১২ সাংসদের সাসপেনশনের প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে গাঁধী-মূর্তির পাদদেশে অবস্থান রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধী দলের সাংসদেরা। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
‘গণতন্ত্র বাঁচাও।’
গত দু’দিনের মতো বৃহস্পতিবারও রাজ্যসভা থেকে বারো জনকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে গাঁধী মূর্তির সামনে এই স্লোগান নিয়ে ধর্নায় বসলেন বিভিন্ন বিরোধী দলের সাংসদরা। উপস্থিত থেকে স্লোগান দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও।
অন্য দিকে বিষয়টি নিয়ে হইচই করার পরে আজকেও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু সাংসদ অসদাচরণ করেছেন। কিন্তু তার জন্য তাঁদের কোনও অনুশোচনা নেই। তা সত্ত্বেও কক্ষের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত নির্দেশ প্রত্যাহার করার জন্য জোর দিচ্ছেন বিরোধীরা। এটা কি গণতন্ত্রের প্রতি সম্মান জানানোর মতো কাজ?’ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যসভার কিছু সাংসদ এই সাসপেনশনকে অগণতান্ত্রিক বলে বর্ণনা করছেন। বেঙ্কাইয়ার কথায়, ‘এই ধরনের পদক্ষেপ প্রথম নয়। সদস্যদের এই ভাবে সাসপেন্ড করা ১৯৬২ থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১১ বার ঘটেছে। সবই সমসাময়িক সরকারের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে। সবই কি অগণতান্ত্রিক ছিল? যদি তা-ই হয়, তা হলে এত বার কেন এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল?’
তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সরকার চায় না মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে। তাই তারা সংসদকে বিরোধীশূন্য করতে চায়। যে ভাবে সংসদের টিভি কভারেজ হচ্ছে তাতেই স্পষ্ট, শুধুমাত্র সভার অধ্যক্ষ এবং বিজেপির সাংসদদের ছাড়া কাউকে দেখানো হচ্ছে না।’’
সংসদে সাংবাদিকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ ঘিরেও বিতর্ক বাড়ছে। গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন লটারি করে হাতে গোনা কয়েক জন সাংবাদিককে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দিল্লির প্রেস ক্লাব থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত মিছিল করেছেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের দাবির সমর্থনে আজ বিবৃতি প্রকাশ করেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার দিল্লির প্রেস ক্লাবে গিয়ে সেই বিবৃতিটি ডেরেক ও’ব্রায়েন তুলে দেন প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্টের হাতে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, ‘‘যে সব সংবাদমাধ্যম সরকারের পক্ষে কথা বলে, তারা তো দিব্যি অনুমতি পাচ্ছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, খবর সেন্সর করতে চাইছে সরকার। সংসদের দুই কক্ষের কাছে আমাদের বিনীত নিবেদন, এই নিয়ম পুনর্বিবেচনা করা হোক।’’ সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের প্রবেশে অনুমতি চেয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সাংসদ অধীর চৌধুরীও।