রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে বাধা পুলিশের। ছবি: পিটিআই।
মোদী নগরে আটকে দেওয়া হল রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে। নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের সময়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আজ মেরঠ যেতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু পথে উত্তরপ্রদেশের মোদী নগরে তাঁদের আটকায় যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ। যা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে কংগ্রেস। এআইসিসি সূত্রের খবর, রাহুলেরা ফের মেরঠে পৌঁছনোর পরিকল্পনা করছেন।
ক’দিন আগে নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের সময়ে মেরঠে নিহন হয়েছিলেন পাঁচ জন বিক্ষোভকারী। সেখানে এখন ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। মেরঠের পথে মোদী নগর-পারতাপুর এলাকায় আজ রাহুলদের আটকায় পুলিশ। নোটিস দিয়ে জানানো হয়, মেরঠের পরিস্থিতি স্পর্শকাতর, ১৪৪ ধারা রয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, সেই সময়ে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা পুলিশকে প্রস্তাব দেন, কংগ্রেসের মাত্র এক জন নেতাকে নিয়ে মেরঠে পৌঁছতে চান তাঁরা। কিন্তু তারও অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পরে রাহুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘পুলিশকে আমরা বলেছিলাম, আমাদের আটকানো হচ্ছে বা ফিরে যেতে বলা হচ্ছে কেন, সেই নির্দেশের কাগজপত্র দেখাতে। কিন্তু পুলিশ কিছুই দেখায়নি।’’
যোগীর পুলিশ অবশ্য বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কাকে নোটিস দিয়েই জানানো হয়েছিল, মেরঠে ১৪৪ ধারা রয়েছে। পরিস্থিতি স্পর্শকাতর। রাহুলদের বলা হয়, তাঁদের সফরের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে সেই দায়িত্ব নিতে হবে। পুলিশের আরও দাবি, রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে বলা হয়েছিল, যদি তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে জেলা সফর করেন, তা হলে প্রশাসনের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে আটকানো হল কেন, তা নিয়ে আজ ক্ষোভ জানিয়েছেন কংগ্রেসের অমরেন্দ্র সিংহ, অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেলের মতো নেতারা। রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে ‘জ্যান্ত পেট্রল-বোমা’ বলে হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ আজই টুইট করেন— ‘এঁদের থেকে সতর্ক থাকুন।’
রাহুলও আজ নিশানা করেন মোদী-অমিত শাহকে। বিক্ষোভে শামিল ছাত্র-যুবদের ধন্যবাদ জানিয়ে টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ দেশকে ভাগ করতে চাইছেন। তার বিরোধিতায় রাজঘাটে আয়োজিত ‘একতা সত্যাগ্রহ’ সফল করেছেন যাঁরা, তাঁদের ধন্যবাদ।’ রাহুল, প্রিয়ঙ্কাকে মেরঠ যেতে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হিসেবে তুলে ধরেছে কংগ্রেস। ক’দিন আগেই বিক্ষোভের সময়ে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে বিজনৌরে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। তবে পাশের জেলায় যেতে আজ তাঁকে বাধা দেওয়া হল কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
এরই মধ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে ‘উস্কানিমূলক’ বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগে সনিয়া গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, এআইএমআইএম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ও সাংবাদিক রবীশ কুমারের বিরুদ্ধে আজ মামলা দায়ের হয়েছে আলিগড়ের একটি আদালতে। প্রদীপ গুপ্ত নামে এক আইনজীবী এই অভিযোগ করেছেন। ২৪ জানুয়ারি মামলার শুনানি।