কুনোর জঙ্গলে আফ্রিকা থেকে আনা চিতা। ফাইল চিত্র।
কুনোর চিতাদের গলা থেকে রেডিয়ো কলার খুলে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। চিতার মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে এই রেডিয়ো কলার, তেমনটাই আশঙ্কা। ফলে কুনোর জঙ্গলে এখন যে ১০টি চিতা রয়েছে, তাদের রেডিয়ো কলার খুলে নেওয়া হতে পারে।
দু’জন দক্ষিণ আফ্রিকান চিনা বিশেষজ্ঞ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, আফ্রিকা থেকে আনা চিতাগুলির গলায় পরানো রেডিয়ো কলার তাদের সমস্যার কারণ হতে পারে। মধ্যপ্রদেশের মুখ্য বনসংরক্ষক আধিকারিক জেএস চৌহান বলেন, ‘‘চিতার রেডিয়ো কলার নিয়ে আমরা আগামিকাল একটি বৈঠকে বসব। বর্ষার মরসুমে রেডিয়ো কলারের জন্য চিতাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এই সময় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে। চিতারা নখ দিয়ে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ চুলকানোর চেষ্টা করে। এর ফলে রেডিয়ো কলার ভেঙে যেতে পারে। সংক্রমণ হলে মাছি বা অন্য কোনও পতঙ্গের মাধ্যমে তা অন্য চিতাদের দেহেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। চিতাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হতে পারে এই সংক্রমণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।’’
কুনোর জঙ্গলে গত তিন দিনে দু’টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে একই রকম সমস্যা দেখা গিয়েছে। দু’টি চিতারই কিডনি এবং হৃৎপিন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে রেডিয়ো কলারের কারণেই চিতাগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে মানছেন না বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা মনে করছেন, মৃত্যুর অন্যান্য কারণের সঙ্গে এটিও অন্যতম হতে পারে।
চিতাদের গলা থেকে রেডিয়ো কলার খুলতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন বনকর্তারা। বৃহত্তর জঙ্গলে ১০টি চিতা ছাড়াও কুনোর সংরক্ষিত পরিসরে রয়েছে আরও পাঁচটি চিতা। সবক’টির গলা থেকে রেডিয়ো কলার খুলতে কত সময় লাগবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।
যে কোনও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণস্থলে রেডিয়ো কলার ব্যবহার করা হয়। পশুর গতিবিধির দিকে নজর রাখতে এগুলি কাজে লাগে। কোনও কারণে কোনও চিতাকে যদি খুঁজে না পাওয়া যায়, রেডিয়ো কলারের মাধ্যমে সহজেই তার অবস্থান জানা যাবে। সুন্দরবনের বাঘেদের গলাতেও রেডিয়ো কলার পরানো থাকে। কিন্তু জঙ্গলে বিভিন্ন রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় পশুরা। এর ফলে রেডিয়ো কলার কখনও ভেঙে যেতে পারে। তা থেকে পশুর শরীরে সংক্রমণও ছড়াতে পারে। কুনোর জঙ্গলে একের পর এক চিতার মৃত্যুর পর তাই রেডিয়ো কলারগুলি খুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।