Demolition of Illegal Constructions in KMC areas

বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে সদিচ্ছা নেই কলকাতা পুরসভার, ফোন করে মেয়রের কাছে অভিযোগ, বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ

কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কোনও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে পুরসভা দায়িত্ব দেয় তার ঠিকাদারি সংস্থাকে। সেই ঠিকাদার সংস্থার যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন না করলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কলকাতা পুরসভাকে। এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ১৩:৪১
Share:
KMC is not trying to demolish illegal constructions, complain goes to Mayor Firhad Hakim

ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।

বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে কলকাতা পুরসভার সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলে খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছেই অভিযোগ জানালেন বাসিন্দারা। আর সেই অভিযোগ পাওয়ার পরেই কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈনকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দিলেন তিনি। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে বোরো-৩ এবং বোরো-১৩ এলাকা থেকে দু’টি ফোন পান মেয়র। দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযোগ করা হয়, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে এসে কেবলমাত্র ছাদ ফুটো করে দিয়েই চলে গিয়েছে কলকাতা পুরসভা। যেখানে বেআইনি নির্মাণ সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা, সেখানে নামমাত্র ছাদ ফুটো করে নিজেদের দায়িত্ব সম্পন্ন না করেই ফিরে গিয়েছে পুরসভা। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মেয়র। সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা পুরসভার কমিশনারকে বেআইনি নির্মাণ গুঁড়িয়ে দেওয়া নিয়ে একটি দ্রুত নির্দেশিকা জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেছেন, ‘‘এখনই আমি পুরসভার কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি। উনি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে, বাড়ি ভেঙে ফেলা মানে গর্ত তৈরি করা নয়। হয় ভাঙতে হবে, না হলে ছেড়ে দিতে হবে। যারা বাড়ি ভাঙার কাজের নামে একটা সামান্য গর্ত করে কলকাতা পুরসভার থেকে টাকা নেয়, তারা আমাদের বোকা বানাচ্ছে। এই বিষয়ে কমিশনার একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে বিষয়টি স্পষ্ট করে দেবেন।’’ এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কোন বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ক্ষেত্রে পুরসভা দায়িত্ব দেয় তার ঠিকাদারি সংস্থাকে। সেই ঠিকাদারি সংস্থার যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন না করলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় কলকাতা পুরসভাকে। এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে বলেই পুরসভার আধিকারিকদের অনুমান। নতুন বিজ্ঞপ্তি জারির পাশাপাশি এখন থেকে ঠিকাদার সংস্থাগুলি ঠিকঠাক ভাবে দায়িত্ব পালন করছে কি না, সে বিষয়েও নজর রাখবেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকেরা।

বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পদক্ষেপ প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এই ফোন পেয়েই প্রথম বার আমি সতর্ক হলাম এমনটা নয়, আমি চোখ-কান খোলা রেখেই মেয়র হিসেবে সারা দিন ঘুরে বেড়াই। লোকের সঙ্গে কথা বলি। আমি রাস্তাঘাটে বসে যাই, ফুটপাতে চায়ের দোকানে কথা বলি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা ৩০-৪০ বছর ধরে চলছে। বাড়ি ভাঙার নামে গর্ত করে চলে যাবে। আবার প্রোমোটার সেই গর্ত বুজিয়ে বিক্রি করে দেবে, এটা হবে না। বাড়ি ভাঙা মানে বাড়ি ভাঙাই, হয় ভাঙুন, না হলে ছেড়ে দিন। বলুন, আমি অপারগ। আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করব।’’ প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দর এলাকায় একটি বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় চাপের মুখে পড়েছিল পুরসভা। সেই ঘটনার জেরে তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। যদিও বছরের শেষ দিনে তাঁদের আবারও কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি হলে বিশেষ নজরদারি করেই বেআইনি নির্মাণ গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে যে পদক্ষেপ করবেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মেয়র।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement