Illegal Poppy Farming

পোস্ত চাষ ঝাড়খণ্ডে, মাদক-কারখানা বঙ্গে

গোপন ডেরায় সেই কাঁচামাল থেকেই তৈরি হচ্ছে মাদক! সপ্তাহ দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ থানা এলাকায় প্রায় দেড় কিলোগ্রাম ব্রাউন সুগার-সহ তিন জন মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:১৯
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

দামের চোটে পোস্ত কিনতে ইদানীং বুক কাঁপে বহু মধ্যবিত্ত বাঙালির। দেশে সে ভাবে এর চাষও হয় না। তবে বছর খানেক আগে থেকে রমরমিয়ে পোস্তর চাষ শুরু হয়েছে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকায়। পুলিশের খবর, সেই পোস্ত অবশ্য বাঙালির পাতে দেওয়ার জন্য নয়, বরং পোস্তর আঠা থেকে মাদক তৈরির কাঁচামাল তৈরি হচ্ছে প্রতিবেশী রাজ্যে। তার পরে সেই সব কাঁচামাল চলে আসছে এ রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায়।

Advertisement

গোপন ডেরায় সেই কাঁচামাল থেকেই তৈরি হচ্ছে মাদক! সপ্তাহ দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদের শামসেরগঞ্জ থানা এলাকায় প্রায় দেড় কিলোগ্রাম ব্রাউন সুগার-সহ তিন জন মাদকপাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। ধৃতদের জেরা করতে গিয়েই বাংলা-ঝাড়খণ্ড মাদকচক্রের বিষয়টি জানা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

এসটিএফ সূত্রের বক্তব্য, এর আগে মণিপুর থেকে মাদকের কাঁচামাল আনা হত। সেই চক্র সামনে আসার পরে নজরদারি বেড়েছে। তাই বছর খানেক আগে থেকে ঝাড়খণ্ডে এই চাষ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের রাজমহল, হাজারিবাগ এবং জামশেদপুরের মতো এলাকায় আদিবাসীদের জমি হাতিয়ে পোস্ত চাষ শুরু করেছে এক দল মাদক কারবারি। সেই পোস্তর আঠা থেকে ‘মরফিন’ (যা হেরোইন বা ব্রাউন সুগারের মতো মাদকের কাঁচামাল) তৈরি করে এ রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। তা আসছে মালদহের কালিয়াচক, নদিয়ার পলাশি কিংবা মুর্শিদাবাদের লালগোলায়। ওই এলাকার গোপন ডেরায় মরফিন থেকে তৈরি হচ্ছে হেরোইন বা ব্রাউন সুগার। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি সেই মাদক পাচার হচ্ছে সীমান্তের ও-পারেও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের দাবি, শামসেরগঞ্জে ধৃত তিন জনের মধ্যে দু’জন ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলায় মাদকের কাঁচামাল পাচারের কাজে যুক্ত। তারাই জানিয়েছে, কালিয়াচক, পলাশি কিংবা লালগোলায় কিছু দাগি মাদক মাফিয়া আছে। তাদের তত্ত্বাবধানেই ঝাড়খণ্ডে পোস্তর চাষ চলছে।

এই মাফিয়াদের মাথারা মূলত মালদহের কালিয়াচকের বাসিন্দা বলেও ওই সূত্রের দাবি। মাদক বিরোধী অভিযানে যুক্ত গোয়েন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ এবং সমন্বয়ের ফাঁক থাকছে। সেই ফাঁক গলেই ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা পোস্ত চাষের আখড়া হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে আগামী নভেম্বর মাসেই পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দাদের একটি দল ঝাড়খণ্ডের পুলিশের সঙ্গে মাদক বিরোধী অভিযানে সমন্বয় বৃদ্ধি করা নিয়ে বৈঠক করবে বলে সূত্রের খবর। সেই বৈঠকে পোস্ত চাষ সম্পর্কেও কথা উঠবে বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement