দুই প্রধানের যুদ্ধ। ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং এবং নভজ্যোৎ সিং সিধু।
ক্ষমতা কার বেশি? পঞ্জাবে কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নাকি প্রদেশ কংগ্রেসের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানের? প্রথম জন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ। দ্বিতীয় জন প্রাক্তন ক্রিকেটার, তথা ২০২২-এর বিধানসভা ভোটে পঞ্জাবে মুখ্যমন্ত্রী পদের সম্ভাব্য মুখ নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। আপাতত এই দু’জনের রাজনৈতিক ঠোকাঠুকিতে বেহাল দশা পঞ্জাবের কংগ্রেস শিবিরের নেতা-মন্ত্রীদের। দু’জনেই পালা করে দলীয় বৈঠক ডাকছেন। আর দু’কূল বজায় রাখতে সেই বৈঠকে যোগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতা-মন্ত্রীরা।
রবিবারই সিধুকে পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে বসিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। তার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই পঞ্জাবের কয়েক জন মন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেসের কয়েক জন শীর্ষ পদাধিকারীর সঙ্গে বৈঠক করেন সিধু। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অমরিন্দর ১১ জন কংগ্রেস মন্ত্রী এবং বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেন নিজের বাড়িতে। দুই ‘প্রধান’-এর এই সমান্তরাল বৈঠককে শক্তির আস্ফালন হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
সোমবার সিধু বৈঠকে বসেন পঞ্জাবের মন্ত্রী ত্রিপত রাজিন্দর সিংহ বাজওয়ার বাড়িতে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থেকে শুরু করে পঞ্জাবের প্রথম সারির নেতা এবং কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে অমরিন্দরের বৈঠকে হাজির ছিলেন পঞ্জাবের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্পিকার, বেশ কয়েক জন মন্ত্রী এবং বিধায়ক মিলিয়ে মোট ১১ জন। বুধবার ওখানেই পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ এবং বিধায়কদের মধ্যাহ্ণভোজের নিমন্ত্রণ রয়েছে বলেও খবর। যদিও অমরিন্দরের সংবাদমাধ্যম সংক্রান্ত উপদেষ্টা রবীন ঠুকরাল মধ্যাহ্ণভোজের খবরটি অস্বীকার করেছেন।
অমরিন্দর প্রথম থেকেই সিধুর বিরোধিতা করছেন। পঞ্জাবে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থ সাহিবের পাতা ছেঁড়ার ঘটনা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে আগেও প্রকাশ্যে এসেছে অমরিন্দর এবং সিধুর রাজনৈতিক বিরোধ। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান পদে সিধুকে বসানো নিয়ে আপত্তিও তুলেছিলেন অমরিন্দর। কিন্তু কংগ্রেস তাঁর অপছন্দের লোককে তাঁরই উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করবে, তা মেনে নিতে পারেননি অমরিন্দর। সনিয়াকে সে কথা জানিয়েও ছিলেন তিনি।
তার পরেও রবিবার সিধুকে পঞ্জাবের প্রদেশে কংগ্রেস পদে সিধুর আসীন হওয়ায় পঞ্জাব কংগ্রেসের অন্দরে এক রকম যু্দ্ধেরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।