আন্দোলনের মধ্যেই আগামিকাল সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি হতে চলেছে। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ এনে সাংবিধানিক হস্তক্ষেপের দাবিতে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। আগামিকাল ওই দু’জন ছাড়াও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তাঁদের ওই আন্দোলনের মধ্যেই আগামিকাল সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি হতে চলেছে।
কলকাতার শহিদ মিনার থেকে আজ একেবারে সোজা দিল্লির যন্তর মন্তর। ডিএ মেটানোর দাবিতে আজ থেকে দু’দিনের ধর্না-অবস্থান শুরু করছেন আন্দোলনকারীরা। এ দিনের ধর্নাতে শুধু মহার্ঘভাতা বা ডিএ-র দাবিই নয়, গোটা পশ্চিমবঙ্গে সরকারি দফতরে যে পদ খালি পড়ে রয়েছে, তাতেও নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছে। পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণের দাবিও উঠেছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ছয় লক্ষ পদ খালি। আমরা দ্রুত সেই পদে স্বচ্ছ নিয়োগেরও দাবি করছি।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজকের ধর্নায় দিল্লিতে বসবাসকারী অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সরকারি কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। মঞ্চের আর এক আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘অনেকেই অবসরের পরে ছেলে বা মেয়ের কাছে দিল্লিতে থাকেন। তাঁদের অনেকে আমাদের ধর্না মঞ্চে আসেন। ডিএ-র দাবি পূরণ হলে তাঁরাও উপকৃত হবেন।’’ আগামিকাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীদের চার অথবা পাঁচ সদস্যের দল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে ডিএ-র দাবিতে স্মারকলিপি দেবে বলে ঠিক আছে।
এ দিন যন্তরমন্তরে বক্তা হিসাবে এসেছিলেন কৃষক আন্দোলনের নেতা সিপিএমের হান্নান মোল্লা। বক্তব্য রাখেন বিজেপির শঙ্কুদেব পণ্ডাও। কলকাতা থেকে আগত আন্দোলনকারীদের একটি বড় অংশ দিল্লিতে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার অতিথিশালায় উঠেছেন। কিন্তু ওই অতিথিশালা ঠিক করে দেওয়ার পিছনে বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ভূমিকা থাকায় আজ সেই অতিথিশালা ছেড়ে দেন বেশ কিছু আন্দোলনকারী। বিষয়টির মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি ভাস্করের। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দিল্লিতে থাকার জন্য কোনও নির্দিষ্ট একটি দল নয়, বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম, সকলের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছি।’’
আগত আন্দোলনকারীদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষক। অভিযোগ উঠেছে, ছুটি নিয়ে দিল্লিতে আন্দোলন করতে যাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের। সেই বক্তব্য যে ন্যায্য, তা মেনে নিয়েছেন অনেকেই। ভাস্কর বলেন, ‘‘কিন্তু ১২ বছর ধরে যারা ডিএ থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন, তাঁদের কথাও ভাবা দরকার। আমাদের এই লড়াই ভবিষ্যতের কথা ভেবেই।’’