উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের ওই স্কুলটি আসলে একটি বেসরকারি স্কুল। শুক্রবার ওই স্কুলের অধ্যক্ষ মনোজ বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
ওয়েবসিরিজ সন্ত্রাসকে প্রায় বাস্তবে নিয়ে এলেন এক বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ। বাস্তবের ঘটনাস্থলও উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুর। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রের পা ধরে তিনি ঝুলিযে ধরে রাখলেন স্কুলের সর্বোচ্চতলের বারান্দা থেকে।
ছাত্র একটু বেশিই দুষ্টু। উচিত শিক্ষা দিতে তাকে একটু অন্যরকম শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন অধ্যক্ষ। সেই শাস্তির বহর দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। শাস্তি দেওয়ার জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে প্রধান শিক্ষককেও। শিশুর বিরুদ্ধে অপরাধ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
শাস্তির দৃশ্যটি প্রকাশ্যে এসেছে একটি ভিডিয়ো মারফৎ। উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের একটি স্কুলের বারান্দায় ভিডিয়োটি তোলা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে স্কুলের এক কমবয়সি ছাত্রের একটি পা ধরে খোলা বারান্দা থেকে শূন্যে ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষক। পা উপরে, মাথা নিচে থাকা অবস্থায় ছাত্রটি দু’হাত ছড়িয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। স্কুলের বারান্দায় ভয়ঙ্কর ঘটনাটি চারপাশে ভিড় করে দেখছে ওই ছাত্রের সতীর্থরা। কিন্তু শিক্ষকের তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তিনি হুমকি দিচ্ছেন, ক্ষমা না চাইলে মাটিতে ফেলে দেবেন।
ভিডিয়োটি দেখে উত্তরপ্রদেশের জেলা প্রশাসন স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত শুরু করেছিল। শুক্রবার সেই তদন্তের পর অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের ওই স্কুলটি আসলে একটি বেসরকারি স্কুল। আহরৌরার ওই স্কুলের নাম সদ্ভাবনা শিক্ষা সংস্থান জুনিয়র হাই স্কুল। শুক্রবার ওই স্কুলের অধ্যক্ষ মনোজ বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে শিশু আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সোনু যাদব টিফিনের সময় এক সহপাঠীকে কামড়ে দিয়েছিল। তাতেই সোনুকে ওই ‘শাস্তি’ দেন মনোজ।
শাস্তির ভিডিয়োটি নেট মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। অনেকেই ভিডিয়ো দেখে বলেছিলেন, এমন শাস্তিতে সামান্য বেসামাল হলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। যদিও ছাত্রটির বাবা-মা বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁরা বলেছেন, ‘‘গুরুজি যা করেছেন তা ভুল হতে পারে। কিন্তু তিনি আসলে ভালবেসেই এমন শাস্তি দিয়েছেন। এতে উপকারই হবে।’’
সোনুর বাবা-মায়ের যুক্তি, ছেলে অত্যন্ত দুষ্টু বলে তাঁরাই শিক্ষককে অনুরোধ করেছিলেন তাকে শিক্ষা দিতে। প্রধান শিক্ষক সেই কাজই করেছেন।