ফাইল চিত্র।
কালীপুজো ও দীপাবলিতে সব ধরনের বাজি বিক্রি ও পোড়ানো নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ, এই উৎসবে কোনও বাজি ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র প্রদীপ জ্বালানো যেতে পারে। আদালতের জানিয়েছে, শুধুমাত্র প্রদীপ ও মোমবাতি জ্বেলেই দীপাবলি, ছট, কিংবা গুরু নানকের জন্মদিনের মতো উৎসব পালন করতে হবে। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় বাজি পোড়ানো, বিক্রি করার অনুমতি দেব কী ভাবে? বৃহত্তর মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত। ক্রেতা, বিক্রেতা, প্রস্তুতকারী সংস্থা— সবার কথা ভাবতে হবে।’’
আদালত বলেছে, পরিবেশবান্ধব বাজির অনুমতি দিয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কিন্তু সেগুলো কী ভাবে পরীক্ষা করা হবে? সাধারণ বাজিকে যে পরিবেশবান্ধব বাজি বা গ্রিন ক্র্যাকার্স বলে বিক্রি করা হবে না তারই বা নিশ্চয়তা কোথায়। কে পরীক্ষা করবেন সেই বাজি, তারও কোনও উত্তর পর্ষদের কাছে নেই।
বাজি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাটি করেছিলেন পরিবেশ কর্মী রোশনি আলি। তাঁর যুক্তি ছিল, অতিমারি পরিস্থিতি এখনও বেশ গুরুতর পর্যায়ে রয়েছে। এমন অবস্থায় গত বছরও হাই কোর্ট বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই রায়ের সূত্র ধরেই মামলাকারী রোশনি আদালতকে বলেছিলেন, ‘‘এ বছরও বাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হোক। কারণ বাজির ধোঁয়া থেকে দূষণে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে।’’
শুক্রবার মামলাটির শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেন, ‘‘করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আতঙ্ক এখনও রয়েছে দেশে। এই অবস্থায় বাজি পোড়ানো, বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হবে কী ভাবে?’’ কালীপুজো এবং দীপাবলিতে বাজি নিষিদ্ধ করার রায় দিয়ে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে বলে এই রায় কার্যকর করার ভার নিক প্রশাসন।
শুক্রবার আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে রোশনির আইনজীবী রচিত লাখমানি বলেন, ‘‘বাজির ব্যবহার এবং বাজির বিক্রি দুই-ই নিষিদ্ধ করেছে আদালত। এই রায় অমান্য করলে আইন লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজি বাজেয়াপ্তও করা হবে। করোনা পরিস্থিতিতে এই রায়ের প্রয়োজন ছিল, আমি এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।’’