ফাইল ছবি
হেমন্ত সোরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের পরে রাজ্যের বেশ কয়েক জন জনজাতি কংগ্রেস নেতাও একই পথে হাঁটতে চাইছেন। তাঁদের মতে, ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক অঙ্ক মেনে রাজ্যের কংগ্রেস সাংসদ-বিধায়কদের জনজাতি সমাজের প্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুকেই সমর্থন করা উচিত। প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্হাকে ভোট দিয়ে ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের কোনও রাজনৈতিক স্বার্থই চরিতার্থ হবে না। তাই বিরোধী শিবিরে ভাঙনের পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের নিজের অন্দরেই ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নয়। মহারাষ্ট্রের পরে এ বার ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েই কংগ্রেস নেতৃত্বের কপালে ভাঁজ পড়ছে। মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের জোট সরকারে শিবসেনারই সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। উদ্ধব ঠাকরে মুখ্যমন্ত্রী হলেও তাতে বাধা দিতে পারেননি। ঝাড়খণ্ডে খোদ মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনই কংগ্রেস-আরজেডির সঙ্গ ত্যাগ করে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন বলে কংগ্রেস নেতারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। রাজ্যের নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি বুঝতে চাইছে এআইসিসি-তে ঝাড়খণ্ডের ভারপ্রাপ্ত নেতা অবিনাশ পাণ্ডে।
কংগ্রেস, আরজেডি-র সঙ্গে সরকার চালালেও হেমন্ত সোরেন কিছু দিন আগে রাজ্যসভার নির্বাচনে কংগ্রেসকে আসন ছাড়েননি। এ বার তিনি এনডিএ-প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেন। নরেন্দ্র মোদী ঝাড়খণ্ডে যাওয়ার আগে হেমন্ত নিজে সমস্ত প্রস্তুতির তদারকি করেছেন। রাজ্যের উন্নয়নে কেন্দ্রের সমর্থনও চেয়েছেন। কংগ্রেস নেতারা মুখে বলছেন, হেমন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। কিন্তু ঘরোয়া আলোচনায় তাঁদের বক্তব্য, হেমন্ত আসলে মোদীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডির তদন্ত থেকে বাঁচতে চাইছেন। ফলেতিনি বিজেপির সঙ্গেই সরকার গড়বেনকি না, সংশয় আছে। এরই মধ্যে কংগ্রেসের তিন বিধায়ক, মন্ত্রী রামেশ্বর ওরাঁও, ভূষণ ওয়াড়া, রাজেশ কচ্ছপ দলের মধ্যে জানান, তাঁরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিন্হাকে ভোট দিতে আগ্রহী নন। কারণ যশবন্ত বরাবরই ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেস-বিরোধী রাজনীতি করেছেন। হেমন্তের নেতৃত্বে জেএমএম বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে এই জনজাতি নেতারাও সে দিকে পা যাবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেস।