‘বিপর্যয়ের’ জেরে প্রবল বৃষ্টি গুজরাতের কচ্ছে। প্লাবিত বহু এলাকা। ছবি: পিটিআই।
শক্তি হারালেও শুক্রবার সকালেও তাণ্ডব কমেনি ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ের’। বৃহস্পতিবার অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের আকারে গুজরাতের কচ্ছে আছড়ে পড়েছিল ‘বিপর্যয়’। মাঝরাতেই সেটি শক্তি হারিয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে। শুক্রবার সকালেও ‘বিপর্যয়ের’ তাণ্ডবে নাজেহাল রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলি। রাতভর উপকূলীয় জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। শুক্রবার সকালে কোনও কোনও জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে।
এই ঝড়ে কোনও রাজ্যবাসীর প্রাণহানি না হলেও ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কচ্ছ জেলায়। ঝড়ের দাপটে ৫২৪টি গাছ উপড়ে গিয়েছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে। ফলে গ্রামের পর গ্রাম বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাজ্যের ত্রাণ কমিশনার অলোক পাণ্ডে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, উপকূলীয় জেলার মোট ৯৪০টি গ্রাম পুরোপুরি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে আহত হয়েছেন ২৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৪টি গবাদি পশুর।
প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের ৮টি জেলা ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই জেলাগুলি হল— কচ্ছ, দেবভূমি দ্বারকা, জামনগর, পোরবন্দর, জুনাগড়, গির সোমনাথ, মোরবী এবং রাজকোট। এই জেলাগুলি একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে ‘বিপর্যয়ের’ দাপটে। দ্বারকায় সাড়ে ৩০০টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। বহু কাঁচা বাড়ি মাটিতে মিশে গিয়েছে। বাসিন্দাদের আগেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ায় প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর। অন্য দিকে, মাণ্ডবী শহরও পুরোপুরি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। ঝোড়ো হাওয়ায় শহরের বিভিন্ন জায়গায় গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে।
‘বিপর্যয়’ মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ১৮টি দল কাজ করছে। এ ছাড়াও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১২টি দল, সড়ক এবং আবাসন দফতরের ১১৫টি দল এবং বিদ্যুৎ দফতরের ৩৯৭টি দল যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। শনিবার পর্যন্ত সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত জামনগর বিমানবন্দর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, ৯৯টি ট্রেন বাতিল করেছে পশ্চিম রেল।