ছবি: পিটিআই।
সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল ঠিক সাত দিন আগে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের একেবারেই সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। অথচ সাত দিন পেরিয়ে গোলাপ হাতে হাসিমুখে পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে হাজির দিল্লি পুলিশ!
হিংসা-দীর্ণ উত্তর-পূর্ব দিল্লির পড়ুয়ারা আজ যখন সিবিএসই পরীক্ষা দিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছয়, তখন তাদের গোলাপ দেয় দিল্লি পুলিশ। খজুরী খাস এলাকার সর্বোদয় বাল বিদ্যালয়ের বাইরে এমন দৃশ্যই দেখা গিয়েছে। যে পুলিশ সঙ্কটে পাশে দাঁড়ায়নি, তারা গোলাপ হাতে এলেও এতটুকু ভরসা পাননি অভিভাবকেরা। গোড়া থেকেই উদ্বেগে ছিলেন তাঁরা। তাই যে সব পরীক্ষার্থী, (বিশেষ করে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির) একা যাতায়াতে অভ্যস্ত, তাদেরও সঙ্গে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন অভিভাবকেরা। গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত দল বেঁধে কার্যত স্কুল পাহারা দিয়েছেন তাঁরা।
উত্তর-পূর্ব দিল্লির সব কেন্দ্র মিলিয়ে আজ পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির হার ৯৮.২ শতাংশ ছিল বলে জানা গিয়েছে বোর্ড সূত্রে। ৫১ জন পড়ুয়া অনুপস্থিত ছিল বলে দাবি। যারা পরীক্ষা দিতে আসতে পারেনি, তাদের জন্য সিবিএসই বোর্ড গত কালই জানিয়েছে, ভবিষ্যতে অন্য কোনও তারিখে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রের ছবি আশাব্যঞ্জক হলেও ত্রাণ পৌঁছনো নিয়ে ক্ষোভ রয়ে গিয়েছে বিভিন্ন অংশে। সব নথিপত্র হারিয়ে অন্য উদ্বেগে পড়েছেন অনেকে। বিপর্যস্ত এলাকার মধ্যে মুস্তাফাবাদের আল-হিন্দ হাসপাতালের ত্রাণ শিবিরে এমন অনেক পরিবারই এখন দিশেহারা। হিংসা-বিধ্বস্ত এলাকায় চিকিৎসা ও ত্রাণ পৌঁছনোর ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাই নিয়ে আজই পুলিশকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে দিল্লি হাইকোর্ট। পরবর্তী শুনানি ৩০ এপ্রিল। দিল্লি সরকারের আইনজীবী রাহুল মেহরা আদালতকে জানিয়েছেন, কাল সন্ধ্যায় ফের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ হচ্ছে বলে গুজব ছড়ায়। গুজব নিয়ন্ত্রণে দিল্লি পুলিশ ভাল কাজ করেছে বলে দাবি রাহুলের।
গত কাল সন্ধে সাতটা থেকে মাঝরাত পর্যন্ত পশ্চিম দিল্লি থেকে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে এসেছিল ৪৮১টি ফোন! পশ্চিম দিল্লিতে ১২টি থানা। সব চেয়ে বেশি ফোন এসেছে তিলক নগর এলাকা থেকে, ১৪৮টি। খায়ালা থানা থেকে এসেছে ১৪৩টি ফোন। এ ছাড়াও রাজৌরি গার্ডেন, পঞ্জাবি বাগ, হরি নগর, মোতি নগর এবং জনকপুরী থেকেও এসেছে ফোন। সবারই বক্তব্য ছিল, সংশ্লিষ্ট এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৪ জনকে।
কোথায় কোথায় আরও ত্রাণ পৌঁছনো প্রয়োজন, তার জন্য সরকারের কুইক রেসপন্স টিম-এর কাছে তথ্য পাঠাতে সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।