মীরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সরস্বতীর দেহাংশ (বাঁ দিকে)। মনোজ সানে (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
মনোজ সানে নিজে যতই দাবি করুন, একত্রবাসের সঙ্গী সরস্বতী বৈদ্য আত্মহত্যা করেছেন, পুলিশ মানতে নারাজ। পুলিশ মনে করছে, পরিকল্পনা করেই সরস্বতীকে খুন করেছেন মনোজ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতীর মৃত্যুর ১৫ দিন আগে দোকান থেকে বিষ কিনেছিলেন ৫৬ বছরের মনোজ।
পুলিশের অনুমান, সরস্বতীকে খুনের ১৫ দিন আগে বোরিভলির একটি দোকান থেকে বিষ কিনেছিলেন মনোজ। অভিযোগ, ৩২ বছরের সরস্বতীকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো করা হয়েছে। তার পর তা প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করা হয়েছে। যদিও মনোজ দাবি করেছিলেন, সরস্বতী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর দেহ সরিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যেই তা টুকরো করেছিলেন। তার পর তা প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করেন। যদিও পুলিশ তা মানছে না। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিকল্পনা করেই সরস্বতীকে খুন করেছেন তিনি। হয় ধীরে ধীরে অনেক দিন ধরে বিষ দিয়ে, অথবা একবারেই বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে সরস্বতীকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মীরা রোডের আবাসন থেকে ১৩টি দেহাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ যখন সেখানে গিয়েছে, তখন এক মহিলার পায়ের অংশও মিলেছে। আর এ সব চাপা দিতে সরস্বতীর আত্মহত্যার তত্ত্ব তুলে ধরেন মনোজ। পুলিশের একাংশ মনে করছে, যে হেতু দেহাংশ প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করা হয়েছে, তাই বিষেই সরস্বতীর মৃত্যু কি না, ফরেন্সিক পরীক্ষায় ধরা পড়া সমস্যার। সরস্বতীর বোনের ডিএনএ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। মীরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা দেহাংশের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হবে। শেষকৃত্যের জন্য ওই দেহাংশ সরস্বতীর বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতী যখন ছোট ছিলেন, তখন তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এর পর মায়ের সঙ্গেই থাকতেন তিনি এবং তাঁর বোনেরা। এর পর মায়েরও মৃত্যু হলে তাঁদের আহমেদনগরের এক অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর অনাথ আশ্রম ছাড়েন সরস্বতী। পরে মুম্বইয়ে এসে মনোজের সঙ্গে দেখা হয়। এর পর তাঁরা একত্রবাস করতে শুরু করেন। সরস্বতী বোনেদের কাছে জানিয়েছিলেন, মনোজের সঙ্গে তাঁর মন্দিরে বিয়ে হয়েছে। যদিও বিয়ের কোনও নথিপ্রমাণ মেলেনি। মীরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে সরস্বতীর দেহাংশ উদ্ধারের পর মনোজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, এইচআইভি আক্রান্ত তিনি। কখনও সরস্বতীর সঙ্গে সহবাস করেননি।