আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ও নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে চিকিৎসকদের আন্দোলন। —ফাইল চিত্র।
হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় ফের এক মহিলা চিকিৎসককে হেনস্থার অভিযোগ। এ বার ঘটনাস্থল জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি। শনিবারও গভীর রাতে মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বিরুদ্ধে। আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে যখন নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদে নেমেছেন চিকিৎসকরা, তখন পর পর দু’দিন দেশের দুই প্রান্তে উঠে এল হাসপাতালের মধ্যেই তাণ্ডবের অভিযোগ। রাজৌরির ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রবিবার রাত পৌনে ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছিল। এক রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। অভিযোগ, কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই হাসপাতালে তাণ্ডব শুরু করেন তিনি। জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। তখন সেখানে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে, তাঁকে উদ্দেশ্য করেও ওই ব্যক্তি কুকথা বলেন বলে অভিযোগ। এর পর হাসপাতাল চত্বর থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি হাসপাতালের সম্পত্তি নষ্ট করেছেন এবং কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসককে হেনস্থা করেছেন।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে প্রকাশ, রবিবার রাতের ওই ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দেন। হাসপাতাল চত্বরে প্রতিবাদ শুরু করেন তাঁরা। হাসপাতাল চত্বরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন তাঁরা। যদিও প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা হাসপাতালে যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে আন্দোলনকারীদের জানায়, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পর আবার কাজে যোগ দেন চিকিৎসকরা।
শনিবার রাতেই মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে অনুরূপ একটি ঘটনা ঘটেছিল। রাত প্রায় সাড়ে ৩টে নাগাদ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক মহিলা চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল রোগী ও তাঁর পরিজনদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তাঁরা প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। দেশে চিকিৎসকদের অন্যতম বড় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ দফা দাবিতে শনিবার কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি দাবি ছিল, চিকিৎসকদের জন্য নিরাপদ কর্মস্থলের ব্যবস্থা করা। দেশজুড়ে প্রতিবাদের মুখে কেন্দ্রের তরফেও আশ্বস্ত করা হয়েছে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সুপারিশের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।