প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
চার দিন আগেই কর্নাটকের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে হুবলীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রোড-শো করেছিলেন। সে সময়ে এক কিশোর নিরাপত্তা বলয় ভেঙে তাঁর কাছে চলে গিয়েছিল। এ বার গুজরাত বিধানসভা ভোটে জয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানাতে দিল্লিতে মোদীর রোড-শো আয়োজন করছে বিজেপি। সোমবার বিকেল থেকে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক শুরু হচ্ছে। বর্ণাঢ্য রোড-শো করে প্রধানমন্ত্রী সেই বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন। তার জন্য নয়াদিল্লির প্রাণকেন্দ্রে অশোক রোড, জয়সিংহ রোড, সংসদ মার্গ, টলস্টয় রোড, রফি মার্গ, যন্তর মন্তর রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা কাল দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আশপাশের রাস্তা-সহ গোটা এলাকাতেই প্রবল যানজট তৈরি হবে বলেও আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বিজেপির তরফে আজ দলের নেতা বিনোদ তাওড়ে জানিয়েছেন, গুজরাতে বিপুল আসনে জয়ের জন্য সকলেই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে উৎসুক।
কংগ্রেসের দাবি, কিছু দিন আগে দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় বিপুল সাড়া দেখেই প্রধানমন্ত্রী এ বার দিল্লিতে রোড-শো করছেন। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “ভারত জোড়ো যাত্রার সাফল্য দেখে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই বিজেপিকে দিয়ে রোড-শোয়ের নামে রসিকতার আয়োজন করছেন। যা রাজধানী দিল্লির রাস্তায় সামান্য দূরত্ব চলবে। এ রকম ফাঁপা, সাজানো অনুষ্ঠান করে শুধু প্রধানমন্ত্রীর হয়ে যাঁরা ঢাক পেটান, তাঁদেরই ব্যস্ত রাখা যাবে।’’
মোদী নিজে অবশ্য বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে গুজরাত ভোটের সাফল্য দলের রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিলকে দিয়েছিলেন। সোম ও মঙ্গলবার বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে চলতি বছরে নয়টি রাজ্যে বিধানসভা ভোট ও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হবে। গুজরাত ভোটের সাফল্যের নিরিখে পাটিলকে লোকসভা ভোটের জন্য বড় দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। তাঁকে ভবিষ্যতে বিজেপি সভাপতি পদে জে পি নড্ডার উত্তরসূরি হিসেবেও অনেকে দেখতে শুরু করেছেন।
বিজেপির অন্দরমহলের ইঙ্গিত, মোদী জমানায় ভারত আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ‘বিশ্বগুরু’-র স্থান পেয়েছে এবং গোটা বিশ্বে সনাতন হিন্দুধর্মের গরিমা বেড়েছে বলে লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রচারে নামতে চাইছে। জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক উপলক্ষে বিজেপি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে দেখানো হবে কী ভাবে মোদী জমানায় যোগ দিবস আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধারে কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী মোদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন, ভারত কী ভাবে কোভিডের সময়ে অন্যান্য দেশকে টিকা দিয়ে সাহায্য করেছে, ভারতের অর্থনীতি কী ভাবে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে উঠে এসেছে এবং এখন জি২০ গোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে ভারত কী ভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বিজেপি নেতা বিনোদ তাওড়ে বলেন, ‘‘মোদী জমানায় সুশাসন সর্বপ্রথম থিম নিয়েও প্রদর্শনী থাকছে। বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের জন্য এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। কারণ ভবিষ্যতে এই বার্তা রাজ্যে রাজ্যে নিয়ে যেতে হবে। মুসলিম বোনেদের জন্য পদক্ষেপ, তাতে সাড়া নিয়েও প্রদর্শনী থাকছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের মতো যে সব রাজ্যে বিজেপি বিরোধী শিবিরে রয়েছে, সেখানে বিজেপি কী ভাবে লড়ছে, আন্দোলন করছে, তা-ও প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হবে।