নরেন্দ্র মোদী। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করলেন ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ নিয়ে। বললেন,‘‘কার্যকর্তাদের বলতে হবে, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। আপনারাও সতর্ক থাকুন। দেশসেবাই আমাদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। দেশের মানুষের সেবাই আমাদের সংকল্প।’’
‘‘দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল আমাদের। ভাগাভাগির রাজনীতির মোকাবিলা করতে হবে। জবাবও দিতে হবে। তেমনই আমাদের জন্য মানুষের বিশ্বাসকেও অটুট রাখতে হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভারতের মানুষ স্থায়ী সরকার চান। স্থায়িত্ব চান সবাই। ভারতের কোনও নাগরিক আমাদের উন্নয়নযাত্রায় পিছিয়ে পড়বেন না। সবার জন্য সরকার। সবার জন্য উন্নয়ন। কেউ কেউ বলছেন, আজকের এই জয়ের হ্যাটট্রিক হল ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের জয়ের গ্যারান্টি। মোদীর গ্যারান্টি দেওয়া গাড়ি সবার দ্বারে দ্বারে আসছে। দেশের সফলতার গাড়ি হবে এটা— মোদীর গ্যারান্টি। যেখানে বিশ্বাস খতম হয়, সেখানে মোদীর গ্যারান্টি শুরু হয়। ’’
‘‘এ নতুন ভারত। নতুন গতি। নতুন সংকল্প। আমি আমার ট্র্যাক রেকর্ড দিয়ে বলতে চাইছি,দেশবাসী আপনাদের স্বপ্নই আমার সংকল্প। ওই সংকল্প আমার তপস্যাও।
‘‘দেশের সেবা করার জন্য রাষ্ট্রসেবা করতে হয়। অহংকার, নিরাশা, নেতিবাচক— হেডলাইন দেয় সংবাদমাধ্যমকে। জনতার মনে স্থান দেয় না। নতুন কোনও প্রকল্প হলে, গরিবের জন্য বাড়ি তৈরি করলে কংগ্রেস এবং তার সঙ্গীরা ব্যঙ্গ করে। আপনারা শুধরে যান। জনতা নাহলে আপনাদের বেছে বেছে সাফ করে দেবে।’’
মোদী বলেন, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াইয়ে প্রচুর জনসমর্থন মিলছে। ভোটাররা জানিয়ে দিচ্ছেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে তাঁরা নেই। কেন্দ্রীয় এজেন্সিজদের যাঁরা দুর্নাম করেন, তাঁদের পাশে মানুষ নেই।’’
‘‘লোভলালসার ঘোষণা কখনও ভোটাররা পছন্দ করেন না। তাঁরা চান ভরসা। ভারতের ভোটাররা জানেন, দেশ এগোলে, রাজ্য এগোবে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের সামনে বিজেপি উন্নয়নের নতুন মডেল দিয়েছি। আমাদের নীতি, শুধু দেশ এবং দেশের মানুষ। শুধু নীতি বানাই না আমরা। সেই নীতির লাভ যাতে গোটা দেশে পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করে।’’
মোদী বলেন, ‘‘তেলেঙ্গানার মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিজেপি আপনাদের উন্নয়নের কাজে যুক্ত থাকবে। জয় পাওয়া তিন রাজ্যে বিজেপির উন্নয়নের জয়যাত্রা সীমাবদ্ধ থাকবে না।’’
মোদী বলেন, ‘‘আমি কখনও বড় বড় কথা বলি না। বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিই না। ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে মানুষকে বলেছিলাম, আমি আপনাদের কাছে কিছু চাইতে আসিনি। সরকার গঠন হবে, আপনাদের আমন্ত্রণ করতে এসেছি।’’
‘‘আজ উন্নয়নের জন্য বসে থাকা মানুষজন জানেন, তাঁদের আশা এবং আকাঙ্খা কেবল বিজেপিই পূরণ করতে পারে। আর বিজেপির কর্মকর্তাদের আজ ভূরি ভূরি প্রশংসা করব। আপনাদের কষ্টের ফল আজ আমরা পাচ্ছি। আমাদের সভাপতি নড্ডাজির রণনীতির জন্য এই জয়ের ভাগিদার তিনি। তাঁরও প্রশংসা প্রাপ্য।’’
‘‘তিন রাজ্যেই জয়ে প্রমাণ করেছে বিজেপির উপর মানুষের ভরসা বেড়েই চলেছে। যুবকদের ভরসা বাড়ছে। এটাই আমাদের পাওনা।’’
মোদীর দাবি, নারীশক্তির জয়জয়করা হয়েছে তাঁর জমানায়। উন্নয়ন হয়েছে সর্বত্র। তাঁর কথায়, ‘‘নারীশক্তির উন্নয়ন ছিল বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য। সেই চেষ্টা করে গিয়েছি। মহিলারা আশীর্বাদ করেছেন। দেশের সব মা-বোনকে বলছি, বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তা ১০০ শতাংশ পূরণ করব। এটা মোদীর গ্যারান্টি।’’
মোদীর অভিযোগ, চার রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জাতি এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাগাভাগির চেষ্টা করেছিল বিরোধীরা। তিনি তা হতে দেননি।
মঞ্চে বলতে উঠলেন মোদী। করতালি এবং অভিবাদনের মধ্যে মোদী প্রথমেই ধ্বনি তোলেন, ‘‘ভারত মাতা কি জয়!’’
‘‘অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন আমাদের রণনীতি কী। আসলে রণনীতি সময়ে সময়ে পাল্টায়। আমাদের কার্যকর্তাদের দিনরাতের পরিশ্রমকে ভোটে বদল করাই আমাদের রণনীতি। তাই তাঁদের সবাইকে ধন্য়বাদ জানাচ্ছি।’’ বললেন নড্ডা।
ওবিসিকে গালি দেওয়া মানে প্রধানমন্ত্রীকেই গালি দেওয়া। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করা।— এই ভাষাতেই কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের আক্রমণ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।
‘‘দেশের উন্নয়নকে সামনে রেখেই আমাদের দৌড়। ইন্ডিয়া জোটের নতুন নতুন জোশ, নতুন নতুন লোক— কুমীরের কান্না কাঁদছেন। তাঁরা ওবিসির জন্য কাঁদছেন। তাঁরা জেনে রাখুন, মোদীজি সবার প্রধানমন্ত্রী।’’ বললেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা।
জেপি নড্ডা বললেন, ‘‘এক নয়, একের পর এক ভোটে জয়ের দোরগোড়ায় বিজেপিকে পৌঁছে দিয়েছেন মোদী।’’